Mon, July 1, 2024

ই-পেপার দেখুন

ঈদ ও ফিলিস্তিনের হার না মানা মজলুম মানুষ

Bipasha Chakraborty

Published: 18 June, 2024, 10:50 AM
ঈদ ও ফিলিস্তিনের হার না মানা মজলুম মানুষ

 

আহমদ হাসান ইমরানঃ ভারতের অধিকাংশ জায়গায় ত্যাগ ও কুরবানির উৎসব ঈদ-উল-আযহা পালিত হচ্ছে। রবিবার মক্কা, মদিনা-সহ হেজাজে এবং তুরস্ক, বসনিয়া, আলবেনিয়া-সহ ইউরোপ ও আমেরিকার সমস্ত দেশে মুসলিমরা ঈদ পালন করেছে। 
ভারতীয় উপমহাদেশের তিন রাষ্ট্র হিন্দুস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে আজ ঈদ পালিত হবে। তিন রাষ্ট্র মিলিয়ে ৫০ কোটিরও বেশি মুসলিম আজ ঈদের দিনে আল্লাহর কাছে নত হবেন। স্মরণ করবেন ইব্রাহিম আ. ও ইসমাইল আ.-এর ত্যাগ, তিতিক্ষা ও কুরবানির কথা। একইসঙ্গে তাঁরা স্মরণ করবেন হেজাজে আরাফার ময়দানে আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সা. বিদায় হজে মানব জাতির পথ চলার জন্য যে ঐতিহাসিক ও বিপ্লবী ভাষণ দিয়েছিলেন, তারও কথা। 
আরাফার ময়দানে সমাবেত হয়েছেন সমগ্র দুনিয়া থেকে আসা লক্ষ লক্ষ হাজি। রবিবার তাঁদের হজযাত্রা সম্পূর্ণ হয়েছে। কারণ, আরাফার ময়দানে উপস্থিত হলেই হজ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তাই এই হজ পালনকারীরা আজ খুশি। আল্লাহর দরবারে হাত তুলেছেন হজ-প্রত্যাশী অসংখ্য মুসলিম নারী এবং পুরুষ। তাঁদের সবাই অবশ্যই তাঁদের দোয়ায় ফিলিস্তিনের মজলুম নর-নারী এবং অসীম কুরবানি প্রদানকারী হার না মানা যোদ্ধাদের কথাও মনে রেখেছেন। তাঁদের প্রার্থনায় এদেরকে স্মরণ করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছেন।
যখন আরব বিশ্ব ঈদ পালন করছে, আর বিশ্বের ২০ লক্ষেরও বেশি হাজি রবিবার হজ পালন করে কুরবানি প্রদান করেছেন, শয়তানকে পাথর মেরেছেন এবং এক আধ্যাত্মিক জাগরণ ও তৃপ্তি নিয়ে তাঁরা এবার হয় মদিনায় মসজিদ-ই-নববী-তে যাবেন কিংবা কাবায় আরও তাওয়াফ সম্পন্ন করে দেশের জন্য বিমানের উঠবেন। 
কিন্তু সবথেকে দুঃখের কথা হচ্ছে, যখন ২০ লক্ষের বেশি হজ-প্রত্যাশী হজ সম্পন্ন করলেন তখন গাজায় ২৩ লক্ষেরও বেশি ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ ইসরাইলি হামলা, অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত শহরে খাদ্য ও পানির অভাব, আশ্রয়ের অভাব এবং অসুস্থ ও জখমদের চিকিৎসার অভাবে প্রতিদিনই শাহদত বরণ করছেন। নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৩৭,৪০০ ছাড়িয়েছে। মারাত্মকভাবে আহতের সংখ্যা ৮৫,০০০ ছাড়িয়েছে। পরিসংখ্যানবিদরা গাজার জনসংখ্যা ২৪ লক্ষ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তার মধ্যে আহত ও নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। আর ২৩ লক্ষ ফিলিস্তিনি মৃত্যুর অপেক্ষায় ধুঁকছে। 
রাজা-বাদশাহ ও শেখ-সাহেবরা তেল ও সোনার খনিতে বসে পশ্চিমা কায়দায় জীবন উপভোগ করছেন। যায়নবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইলকে সর্বপ্রকার সহায়তা দিয়েছে চলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সউদি আরব, মিশর প্রভৃতি দেশের স্বৈরতান্ত্রিক শাসকরা। ফিলিস্তিনিদের উপর জেনোসাইড তাদের বিন্দুমাত্র বিচলিত করছে না। বরং স্পেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, পেরু প্রভৃতি দেশগুলি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে এই জেনোসাইডের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দাবি করেছে। 
তাই অনেকে বলছেন, ইসরাইল ও মার্কিন দালাল তথা কথিত এই মুসলিম দেশগুলির শাসকদের উপর আল্লাহর লানত। লানত তাঁর ফেরেস্তাদের। এরা যে খুব শীঘ্রই ক্ষমতা থেকে উৎখাত হবে এবং ওই সব দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে তাতে সন্দেহ নেই। আর ঈমানের জোর এবং আল্লাহর মদতে সংগ্রামরত ফিলিস্তিনিরা যে বিজয়ী হবেন, সে বিষয়ও নিশ্চিত। 
আসলে আরবরা বিশেষ করে হেজাজ অঞ্চলে সউদি আরব ও জর্ডন ব্রিটিশদের মদদে উসমানীয় খিলাফতকে উচ্ছেদ করে। আর তখন থেকেই মুসলিম বিশ্বের দুর্গতি শুরু। আল্লাহ নিশ্চয়ই মুসলিম বিশ্বের জনগণকে সাহায্য করবেন।

Leave a comment