রফিকুল হাসান, ভাঙড়: দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড় এলাকার স্বাস্থ্য উন্নয়নে পথচলা শুরু হল এসআর ডায়াগনস্টিক এণ্ড পলিক্লিনিকের। রবিবার ফিতে কেটে এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন করেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি ও রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান। সঙ্গে ছিলেন এসআর ডায়াগনস্টিক সেন্টার এণ্ড পলিক্লিনিকের পরিচালক হাজী আবদুর রউফ খান সহ বিশিষ্টরা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সওকাত মোল্লা।
ডায়াগনস্টিক সেন্টার এণ্ড পলিক্লিনিকের পরিচালক হাজী আবদুর রউফ খানের সঙ্গে সউদি থেকে আগত হাকীমুল ইসলাম —- ছবি- খালিদুর রহিম
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি রসূল সা.-এর হাদিস উল্লেখ করে বলেন, সব রোগের চিকিৎসা আছে। সমাজসেবার জন্য জনাব আবদুর রউফ খানের এই উদ্যোগের ভুয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, অসুস্থ হলে আমাদের দোয়া এবং দাওয়া দুই-ই দরকার। কেননা সেবার মধ্য দিয়ে মানুষ খুশি হলে আল্লাহ খুশি হবেন। ইসলামের ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে তিনি মনে করিয়ে দেন হাফেজ ইবনে সিনা চিকিৎসাশাস্ত্রের জনক ছিলেন। কিন্তু তাঁদের উত্তরসূরি হিসেবে আমরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে গিয়েছি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলায় আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েরা এখন ডাক্তার হচ্ছে। সমাজসেবায় এগিয়ে আসছেন। এই ধরনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন হওয়ায় ভাঙড়ের মানুষের উপকারে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি।
এদিন আবদুর রউফ খানের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান বলেন, স্বাস্থ্যই আমাদের সম্পদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে কলকাতা ছাড়িয়ে বিভিন্ন জেলায়ও স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়ন ঘটছে। আবদুর রউফ সাহেব মান সম্পন্ন এক ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই ভাঙড় এলাকায় শুরু করেছেন। এতে সমস্তস্তরের মানুষের উন্নয়ন হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরানকে সম্মাননা প্রদান ছবি- খালিদুর রহিম
ইমরান সাহেব কুরআন ও হাদিসের কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, মৃত্যু ছাড়া প্রত্যেক রোগের ওষুধ আছে। প্রতি বছর বাংলা থেকে আমাদের ঘরের ১০০০ ছেলেমেয়ে ডাক্তারি পড়ছে। সংখ্যালঘু সমাজের উন্নয়ন হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিধায়ক সওকাত মোল্লা খুশি প্রকাশ করে বলেন, ধীরে ধীরে ভাঙড় এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক মানোন্নয়ন ঘটছে। এই ধরনের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন হওয়ায় ভাঙড় ও ক্যানিং এলাকার মানুষ বেশি উপকৃত হবেন। এই এলাকার মানুষকে আর কষ্ট করে গাড়ি ভাড়া করে কলকাতায় যেতে হবে না। এখন থেকে ভাঙড়ে বসে সব ধরনের টেস্ট করা যাবে বলে তিনি জানান। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার পরামর্শ দেন বিধায়ক।
এদিনের অনুষ্ঠানে সুদূর সৌদি আরব থেকে হাজির হয়েছিলেন হাকীমুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইএএস শাকিল আহমেদ, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবি আবদুর শুকুর আলি খাঁন, শিল্পপতি সৈয়দ মেহতাব হোসেন, নওশাদ আলি খান, দীনেশ কুমার বাঙ্কা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম, জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মোক্তার শেখ, ব্যবসায়ী তথা হাজী আবদুর রউফ সাহেবের জামাতা আক্তার উদ্দিন মন্ডল, ভাঙড় কলেজের অধ্যাপক সোমনাথ মণ্ডল, হেড ক্লার্ক কুদ্দুস আলি, আহসান মোল্লা সহ স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।