Sat, July 6, 2024

ই-পেপার দেখুন

কুকীর্তিতে ভরা ধর্মগুরু ভোলে বাবার জীবন, আশ্রমে থাকত সুন্দরী মেয়েরা, ছিল প্রভাবশালীদের যাতায়াত

Bipasha Chakraborty

Published: 03 July, 2024, 05:08 PM
কুকীর্তিতে ভরা ধর্মগুরু ভোলে বাবার জীবন, আশ্রমে থাকত সুন্দরী মেয়েরা, ছিল প্রভাবশালীদের যাতায়াত
ভোলে বাবা

 

নয়াদিল্লি, ৩ জুলাই চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে দেহের সারি। হাথরাসের পদপিষ্টের ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। মঙ্গলবার মুঘলাগড়ি গ্রামে ভোলে বাবার সৎসঙ্গে প্রবচন শুনতে এসে 'বাবা'র পদধূলি নিতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে প্রায় ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা বহু। অসর্মথিত সূত্রের খবর হতা-হতের সংখ্যা গণনাতীত। অভিযোগ, ইউপি সরকার মৃত্যুর সঠিক দিচ্ছে না, তথ্য প্রমাণ লোপাট করা হচ্ছে। জানা গেছে, পুলিশ সৎসঙ্গে সাময়িক অনুমতি দিয়েছিল, কিন্ত ৮০ হাজারের জমায়েতের অনুমতি থাকলেও আড়াইলক্ষ ভক্ত উপস্থিত হয়।

ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের হয়েছে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে। ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। 

ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা পদপিষ্ট কাণ্ডের মূল নায়ক ভোলে বাবা। সূত্রের খবর, তিনি মইনপুরীর আশ্রমে লুকিয়ে আছেন। অবিলম্বের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন যোগী। ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে মুখ্য সেবায়েত দেবপ্রকাশ মধুকরের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে, এফআইআরে নাম নেই ভোলে বাবার। জানা গেছে, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে ঊর্ধ্বতন সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে তার। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ঘনিষ্ঠ তিনি। সখ্যতা রয়েছে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গেও। এমনকি ভোলে বাবার মেজোভাই সুরজ পাল বসপার সঙ্গে যুক্ত। তৃতীয় ভাই গ্রামের মুখিয়া।

সুরজপাল সিং থেকে নারায়ণ সাকার তারপর ভোলে বাবা নামে জনপ্রিয়। ভোলে বাবা নিজেকে বিষ্ণুর অবতার বলতেন। তার অনুগামীরা বলতেন বাবার হাতে একটি ঐশ্বরিক চক্র রয়েছে। একসময় পুলিশের কনস্টেবল পদে দীর্ঘ ১৮ বছর কর্মরত থাকার পর স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে তিনি সাকার বিশ্ব হরি রূপে পরিচিত হন। তবে কুর্কীতির ঝুলিতে ভরা এই ভোলে বাবার জীবন। তার আশ্রমে থাকতেন সুন্দরী মেয়েরা। সেই আশ্রমে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির অবাধ যাতায়াত ছিল। তবে সব কিছুই গোপনীয়তার সঙ্গে চলত। বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এক আভিজাত্যপূর্ণ জীবন কাটাতেন ভোলে বাবা। দামি গাড়িতে চড়ে ঘুরতেন। তবে সেই সমস্ত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ছিল তার ভক্তদের নামে। দেশজুড়ে করোনা আতঙ্কের সময় ২০২২ সালের মে মাসে ফররুখাবাদে জমায়েত করেন তিনি। এমনকি গ্রামের বহু জমি হাতিয়ে আশ্রম তৈরি করেছেন এক ধর্মগুরু। ২০০১ সালে মৃতকে বাঁচিয়ে দেওয়ার বুজরুকিতে জেলে যান এই ভোলে বাবা। সোশ্যাল মাধ্যমে অ্যাক্টিভ না থাকলেও উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা,  রাজস্থান, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশে তার ভক্তের সংখ্যা বহু। ভোলে বাবা নিজে একজন জাটভ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। তপশিলি জাতি উপজাতি থেকে ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে ভোলে বাবা অধিক জনপ্রিয়।

   

Leave a comment