পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: লাদাখে সরকারি চাকরিতে স্থানীয়দের জন্য ৯৫% সংরক্ষণে সম্মতি কেন্দ্রের। সুবিধা পাবেন মহিলারাও। বুধবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের সভাপতিত্বে লেহ এপেক্স বডি এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (কেডিএ) –এর ৮ নেতা বৈঠকে বসেন। সেখানেই সংরক্ষণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ৯৫ শতাংশ কোটার এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষণ পাবেন মহিলারা। পাশাপাশি লাদাখের সরকারী ভাষা হিসাবে উর্দু এবং ভাতিকে অন্তর্ভুক্তিকরণের কথা জানানো হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে কেডিএ-র সাজ্জাদ কারগিলি সংবাদ মাধ্যমে জানান, এদিনের মিটিং ফলপ্রসূ হয়েছে। স্থানীয়দের জন্য ৯৫ শতাংশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছেন কেন্দ্র সরকার। এবার থেকে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বড় সুবিধা পাবেন লাদাখের স্থানীয়রা। আগামী ১৫ জানুয়ারি ফের একটি বৈঠক হবে। তাতেই এই সিদ্ধান্তের বিস্তারিত চূড়ান্ত হবে। কেন্দ্র শাসিত এই অঞ্চলে বেকারত্ব সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এবং তরুণ প্রজন্মের ওপর যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বেকারত্বের প্রসঙ্গে কেন্দ্র আমাদের আশ্বাস দিয়েছে যে শীঘ্রই নিয়োগ শুরু হবে।
এদিনের বৈঠকের মোট চারটি দাবি ছিল। সেগুলো হল লাদাখের জমি, সংস্কৃতি ও পরিচয় রক্ষার জন্য রক্ষাকবচ, পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন ও পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও লেহ ও কার্গিল জেলার জন্য পৃথক লোকসভা আসন। ঘটনাপ্রসঙ্গে নির্দল সাংসদ হানিফা জান জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে যে আদমশুমারির পরে লে ও কারগিলের পৃথক লোকসভা আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দাবি বর্তমানে সাংবিধানিকভাবে সম্ভব নয় কারণ ইউটি-র কোনও আইনসভা নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৯-এর ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যারহার হয়। তারপর রাজ্যটিকে ভেঙে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। দু’ভাগে ভাগ হয়। এর পরে, দুটি সংগঠন– কেডিএ এবং এলএপি লাদাখের জনগণের হয়ে নানান দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রথমে স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলে। তারপর স্থানীয়দের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণ এবং লে-কারগিলের জন্য একটি করে সংসদীয় আসনের দাবিতে বিক্ষিপ্তভাবে একাধিক আন্দোলন করে। পাশাপাশি, লাদাখকে একটি পূর্ণ রাজ্যে পরিণত করার এবং লাদাখে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল কার্যকর করার দাবিও জানানো হয়েছিল। সামাজিক কর্মী সোনম ওয়াংচুকও এইসব সংগঠনগুলির আন্দোলনে যোগ দেন।সম্প্রতি লাদাখের স্থানীয় জনগণের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণ এবং অন্যান্য দাবি নিয়ে রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। এ সময় দিল্লি পুলিশ তাঁকে আটকও করে। এর আগে মার্চ মাসে তিনি ২১ দিনের অনশনও করেছিলেন। অনশন শেষ করে ওয়াংচুক বলেছিলেন, এটা আন্দোলনের শেষ নয়। আজ থেকে আন্দোলন শুরু তবে নতুন ভাবে।