পুবের কলম প্রতিবেদক: নাখোদা একটি ফার্সি শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ হল জাহাজের ক্যাপ্টেন বা জাহাজ যোগে আমাদানি রফতানি ব্যবসা করে থাকেন এমন মানুষ । বিভিন্ন পুস্তক বা ইতিহাস ঘেঁটে নাখোদা সম্বন্ধে যা ইতিহাস পুনরুদ্ধার করা যায় তা হল গুজরাটের কচ্ছ নামে একটা জায়গাতে কিছু সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলিমরা বসবাস করতেন।যাদের এক কথায় “কাচ্ছি মেমন জামাত” বলা হয়ে থাকে। সেই সময় তাদের নেতা আব্দুর রহিম ওসমান ছিলেন পেশায় সমুদ্র বণিক। তিনি ১৯২৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিটের সংযোগস্থলে চিৎপুরে এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। আব্দুর রহিম ওসমান তাঁর উপার্জিত টাকা দিয়ে এই মসজিদটির নির্মাণ শুরু করেন।তৎকালীন সময়ে ১৫ লাখ টাকা নির্মাণ খরচ বহন করেছিলেন যার বর্তমান মূল্য অনেক, প্রায় কয়েকশো কোটি টাকা ,যেহেতু তিনি পেশায় একজন বণিক,বা ব্যবসায়ী ছিলেন, তাঁর নামানুসারে এই মসজিদটির নামকরণ হয়।
মসজিদের পরিধি : পশ্চিমবাংলার সর্ববৃহৎ এই মসজিদটিতে ২৫টি ছোট মিনার রয়েছে, যার উচ্চতা ১০০ ফুট। ১৫০ ফুট উচ্চতার দুটি বড় মিনারসহ গ্রানাইট পাথর দিয়ে গড়া দুইতলা বিশিষ্ট চাতালে সজ্জিত হয়েছে এই মসজিদ।মসজিদের ভিতরে ১০ থেকে ১৫ হাজার মুসল্লি নামায কায়েম করতে পারেন, অপর দিকে চাতালগুলিতে ঈদের দিন বা অন্য বিশেষ দিনে জনসমাগমে মুসল্লিদের সংখ্যা লাখের ওপর ছাড়িয়ে যায়।
শৈল্পিক স্থাপত্য: মুসলমানদের হাতে তিল তিল করে গড়ে ওঠা এই মসজিদটি কলকাতার অনন্য শৈল্পিক স্থাপত্য। ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী তথা বর্তমান কলকাতাতে এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৪২ সালে।সেই সময়ের সর্ববৃহৎ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাকিনটোশ বার্ন কম্পানি বিহারের তোলেপুর থেকে গ্রানাইট পাথর এনে ইন্দো-সেরাসেনিক পদ্ধতিতে সম্পাদন করে এই সুবিশাল মসজিদটি। শ্বেতপাথরে মোড়া এই মসজিদটির ভিতরের অংশ তাজমহলের কথা মনে করিয়ে দেয় এমনটাই মন্তব্য করেছেন অনেক ভ্রমণকারী্ বা পর্যটকরা।
এই মসজিদটি ঘিরে, আসে পাশে নানান রকমের দোকানপাট রয়েছে। এই দোকান গুলোতে এমনকিছু পাওয়া যায়, যেগুলো পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায়না।