পুবের কলম প্রতিবেদক: পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ‘ডাহা ফেল’ করিয়ে ছেড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর থেকে বাংলার বাইরেও নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়েছে জোড়াফুল শিবির। একে একে গোয়া– ত্রিপুরা– মেঘালয় প্রভৃতি রাজ্যে শুরু হয়েছে বিশেষ রাজনৈতিক অভিযান। সেই অভিযান কিছুটা হলেও সফল। বৃহস্পতিবার মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা এক ডজন বিধায়ক নিয়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। এনিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করলেও বিজেপি বিরোধী প্রধান শক্তি হিসাবে তৃণমূল উঠে আসবেই। এমনই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ফিরহাদ হাকিম।
এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরনিগমের মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন– প্রথমে ভারতের বিরোধী দল হব– তারপর ভারতের সেবকদল হব। এতদিন ভারতে শাসকদল কাজ করত– এখন সেবক দল কাজ করবে। পুরনির্বাচন নিয়ে বারবার আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় তিনি বিজেপিকে খোঁচাও দিয়েছেন ফিরহাদ। তাঁর কথায়– ‘ওঁরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে বলেই এমন ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছে। বিজেপি হারিয়ে গেলে বাংলার মানুষের পক্ষে ভালো।’
পরিবহণমন্ত্রী আরও বলেন– রাজ্যে যখন সিপিএমের সরকার ছিল– তখন তৃণমূল অনেক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। হাজার সমস্যার সম্মুখীন হলেও আমরা কখনও নির্বাচন বন্ধ করার জন্য আদালতে যাইনি। তিনি আরও বলেন– বিজেপির চাওয়া নিয়ে যে আদালত রায় দেবে সেটাও নয়। ফিরহাদ হাকিম বলেন– তৃণমূল মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে আমাদের ভোট প্রচার করতে হয় না। মানুষের সঙ্গে সারা বছরই থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনি মানুষের কল্যাণের জন্য অনেক কাজ করেন। একুশের নির্বাচনের পর বাংলার মানুষ দেখিয়েছে– তাঁরা কীভাবে তৃণমূলের পাশে রয়েছে।
ত্রিপুরা নিয়েও বিজেপিকে খোঁচা দেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন– ত্রিপুরার মানুষকে গণতন্ত্রের অধিকার দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিপ্লব দেবের সরকার। তৃণমূল এর জবাব দেবে। মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেবে। ফিরহাদ হাকিম বলেন– বিজেপি ভোট লুঠ করতে পারবে– কিন্তু মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তৃণমূল ত্রিপুরার মানুষের মনে ঢুকে গিয়েছে– আগামী দিনে আমরাই ত্রিপুরায় সরকার গড়ব।
এদিনই মুকুল সাংমা ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ককে নিয়ে এসেছেন তৃণমূলে। এই মুহূর্তে সেই রাজ্যে তৃণমূলই প্রধান বিরোধী দল। আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেস বড় শক্তি হিসাবে উঠে আসবে– সে আশাও ব্যক্ত করেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন– প্রথমে বৃহৎ বিরোধী শক্তি হিসাবে নিজেদের প্রতিপন্ন করবে তৃণমূল। এরপর ভারতবর্ষের প্রথম ‘সেবকদল’ হয়ে উঠবেন তাঁরা। কলকাতা পুরভোট নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন– গণতন্ত্রের জন্যই তো ভোট। তৃণমূল সব সময় ভোটের জন্য প্রস্তুত। আমরা সারা বছর মানুষের সঙ্গে আছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্য এতগুলো প্রকল্প করেছেন। গত ভোটের ফল তার প্রমাণও দিয়েছে। এবারও ভোটের ফলাফল নিয়ে প্রত্যয়ী আমরা।