পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: হাসাতে হাসাতে চলে গেলেন রাজু শ্রীবাস্তব। মাত্র ৫৮ বছর বছর বয়সে দিল্লির এইমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন হাসির জাদুগর। ১০ আগস্ট ট্রেডমিলে শরীরচর্চা করার সময় হঠাৎই হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। তড়িঘড়ি তাঁকে এইমসে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। পরে অবশ্য তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছিল বলে জানিয়েছিন রাজুর ভাই। বিগত ৪২ দিন থেকে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন এইমসে। আজ সকাল ১০.২০ নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবার ও দেশের অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ খ্যাত রাজু শ্রীবাস্তব। শোকস্তব্ধ বলিউড।
উল্লেখ্য, জিম শারীরিক কসরৎ করতে গিয়ে হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন কমেডিয়ান রাজু শ্রীবাস্তব। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ভেন্টিলেশনে ছিলেন রাজু। মাঝখানে তার শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতি হয়। বের করা ভেন্টিলেশন থেকে। পরে প্রচণ্ড জ্বরের কারণে তাঁকে ফের ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়।
খুব কমদিনেই মানুষের মধ্যে একজন কমেডিয়ান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনেও রাজ ছিলেন একজন মিশুকে মানুষ। পরিচিত হোক কিংবা অপরিচিত কারুর সঙ্গেই ভাব জমাতে বেশিক্ষণ সময় লাগত না। এই একজন সর্বদা হাস্যজ্জ্বল মানুষের জীবন শেষ হয়ে যাবে তা ঘুণাক্ষরে কেউ ভাবতে পারেনি।
স্ট্যান্ড কমেডি ছাড়াও বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতে কমিক রোলে অভিনয় করেছিলেন রাজু। ম্যায়নে প্যার কিয়া, বম্বে টু গোয়া, আমদানি আঠানি খরচা রূপাইয়া, বাজিগর তার অন্যতম। ১৯৮০ সাল থেকে বিনোদন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রাজু। ২০০৫ সালে রিয়েলিটি স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শো দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জের প্রথম সিজনে অংশগ্রহণ তিনি ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি উত্তরপ্রদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
কানপুরে জন্ম ও সেখানেই বড় হয়ে ওঠা রাজু শ্রীবাস্তবের। ১৯৬৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর কানপুরে জন্ম হয় তাঁর। বাবা রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তব ছিলেন কানপুরের প্রখ্যাত কবি। ছেলের নাম তিনি রেখেছিলেন সত্যপ্রকাশ শ্রীবাস্তব। কিন্তু রাজু সকলে তাকে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই চেনা মানুষজনের নকল করতে পারতেন। ছোট থেকেই কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন রাজু।
তার ঘনিষ্ঠদের কথায়, যেকোনও মানুষকে খুব ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতেন। তার সেই মানুষের নকল করে মানুষকে হাসাতেন। এইভাবেই মঞ্চে কমেডির মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন রাজু শ্রীবাস্তব। গত শুক্রবারই রাজুর খবর নিতে তাঁর স্ত্রীকে ফোন করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কৌতুকশিল্পীর অবস্থা জানতে ফোন করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। কিন্তু মাত্র ৫৮ বছর বয়সেই অকালে চলে গেলেন রাজু।