পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ফের এক বাইশ বছর বয়সী মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলায়। নিহত যুবকের নাম জাহিদ। তিনি মুকুন্দগড়ের ধনি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, গুরুতর আহত অবস্থায় গত রবিবার জয়পুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহিদের মৃত্যু হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত লাশ নিতে অস্বীকার করে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। যা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
জানা গেছে, চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা মূলকপরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জাহিদ। গত ২৫ অক্টোবর মৃত জাহিদের ভাই তৌফিক স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর জাহিদকে ক্যাম্পার ভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন দুস্কৃতিকারী। দু’ঘণ্টা পর মৃতের বাবা জামিলের কাছে একটি ফোন আসে। দুস্কৃতিকারীদের ঠিক করে একটি স্থান থেকে ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় সেই ফোনে। জামিল সেই স্থানে পৌঁছাতেই আহত জাহিদকে ভ্যান থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। জামিলের বয়ান অনুযায়ী, ভ্যানে তিনজন ছিল। তাদের মধ্যে দু’জনক্র শনাক্ত করে জামিল। এরপর আহত জাহিদকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় নবগড় হাসপাতালে। সেখান থেকে তাকে প্রথমে সিকার ও পরে জয়পুরের স্থানান্তরিত করা হয়। জয়পুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জাহিদের।
Read More: ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে অস্বীকার, হিজাব পরিহিত মহিলাকে বিনামূল্যের খাবার দিল না বেসরকারি সংস্থা
নবলগড়ের ডিএসপি রাজবীর সিং সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। সমস্ত দিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, গত ২৪ অক্টোবর একজন মহিলা অভিযোগ দায়ের করেন। যিনি অভিযুক্ত এক ব্যক্তির বোন। অভিযোগকারী মহিলার দাবি, গত ২১ অক্টোবর নিহত জাহিদ তাদের বাড়িতে ঢুকে তাকে মারধোর করে। এই ঘটনার পর জাহিদকে একটি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরে জাহিদের বাবা এসে তাকে বাড়ি নিয়ে যায়।
মৃত জাহিদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজস্থান সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজেন্দ্র সিং গুধা। তিনি বলেন, জাহিদকে হত্যা করা হয়েছে শুধুমাত্র তার মুসলিম পরিচয়ের কারণে। তার একমাত্র অপরাধ ছিল যে, সে একজন মুসলিম।তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হল। একইসঙ্গে গুধা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, পাঁচদিন পরেও এফআইআর দায়ের করেনি প্রশাসন। পাশাপাশি তিনি বলেন, প্রশাসন যেভাবে রাতের অন্ধকারে পোস্টমর্টেম করেছে এবং জোর করে শেষকৃত্য করতে চাইছে তাতে বোঝা যায় অপরাধীকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি এটা কখনই হতে দেব না। নিহত এবং তাঁর পরিবারের ইনসাফের জন্য লড়াই করবো।