সেখ কুতুবউদ্দিন: মৌলানা আজাদ কলেজে পাশ-অনার্স কোর্স মিলে আরবি বিভাগে ছাত্র সংখ্যা ৩৩০-এর বেশি। আর শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দু’জন। আগে চারজন ছিলেন। এর মধ্যে একজন ইন্তেকাল করেন, আর একজন অন্য কলেজে বদলি হন। ফারসি বিভাগেও ২৭০ জনের বেশি পড়ুয়ার মধ্যে স্থায়ী শিক্ষক ৩ জন। একটি স্থায়ী শিক্ষক শূন্য পদ রয়েছে ফারসি বিভাগে।
রাজ্যের সরকার অনুমোদিত কলেজগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করে ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। আর সরকারি কলেজে শিক্ষক নিয়োগ করে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন। মৌলানা আজাদ কলেজ সরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই কলেজে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বে পিএসসি। মৌলানা আজাদ কলেজের আরবি বিভাগে কোনও অস্থায়ী শিক্ষক নিযুক্ত নেই। এই কলেজের আরবি বিভাগের পড়ুয়ার সংখ্যা আসন মোতাবেক অঢেল থাকলেও ছাত্র অনুপারে শিক্ষক কম রয়েছে। পড়ুয়াদের দাবি, শিক্ষক নিয়োগ হলে ভালো হয়।
মৌলানা আজাদ কলেজের আরবি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ জামাল শাহ আল কাদরি বলেন, আরবি বিভাগের অনার্সে প্রথম বর্ষে ছাত্রছাত্রী রয়েছে ৬৯ জন। পাশ কোর্সে রয়েছে ৬১। আগে শিক্ষক ছিল ৪ জন। জানা যায়, কোভিডের সময় একজন শিক্ষক ইন্তেকাল করেন। আর একজন অন্যত্র চলে যান। এখন শিক্ষক রয়েছেন ২ জন। মৌলানা আজাদ কলেজে আরবি বিষয়ের পঠন-পাঠন শুরু হয় ১৯২৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর।
এ দিকে, ফারসি বিভাগের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তিনবর্ষ মিলে ২৭০। পাশ কোর্সে প্রথম বর্ষে ছাত্র ৬০ জন। অনার্সে ৩০ জন। স্থায়ী শিক্ষক পদ ৪ জন। রয়েছেন ৩ জন। ২ জন অস্থায়ী শিক্ষক। ফারসি বিভাগের অধ্যাপক মইনুদ্দিন বলেন, মৌলানা আজাদ কলেজে ফারসি বিভাগের ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯২৬ সালের ২ জুলাই এই বিভাগে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছিল।
উল্লেখ্য মৌলানা আজাদ কলেজের আগে নাম ছিল ইসলামিয়া কলেজ। মধ্য কলকাতায় অবস্থিত একটি সরকারি কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এই কলেজ।
শের-এ-বাংলা এ কে ফজলুল হকের উদ্যোগে ১৯২৬ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলার গভর্নর ভিক্টর বুলওয়ার-লিটন, লিটন-এর ২য় আর্ল ইসলামিয়া কলেজ নামে এটি নির্মাণ করেন। বিশিষ্ট মুসলিম ব্যক্তিত্ব হাজী মুহাম্মদ মহসীন কিদওয়াই এই কলেজ-ক্যাম্পাসের জমি দান করেছিলেন। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা তথা পূর্ব বাংলার মুসলমানদের শিক্ষাগত উন্নতি সাধন। আজও এই কলেজের ছাত্রদের একটি বড় অংশ কলকাতার উর্দুভাষী ও বাঙালি মুসলিমরা। যদিও বর্তমানে কলেজটি সকল সম্প্রদায়ের জন্য উন্মুক্ত এবং বাঙালি হিন্দু ছাত্ররাও কলেজের ছাত্র সংখ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
স্বাধীনতার পর কলেজটির নাম পরিবর্তন করে হয় সেন্ট্রাল ক্যালকাটা কলেজ। পরে ১৯৬০ সালে ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আজাদের নামানুসারে কলেজের বর্তমান নাম রাখা হয়।