পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ভারতে যে সময় মুসলিম নাম মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, সংখ্যালঘু তকমা ছিনিয়ে নেওয়ার তৎপরতা চলছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, সেই সময় সিঙ্গাপুরের জন্য একটি ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ঘোষণা দিলেন সে-দেশের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াং। আধুনিক সিলেবাসের সঙ্গে ধর্মীয় শিক্ষার উপরও বেশি জোর দেওয়ার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ওয়াং বলেন, সিঙ্গাপুর কলেজ অব ইসলামিক স্টাডিজকে ভবিষ্যতের সেরা ‘উস্তাজ’ বা আলেম তৈরির জন্য সচেষ্টা রাখা হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা থেকে জানা যায়, এই ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মতত্ত্বের উপর বেশি জোর দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভাইজারি প্যানেলে থাকছে মিশরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়। সিঙ্গাপুরের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার ইউনিভার্সিটি অব জর্ডন এবং মরক্কোর আল-কুরাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ওয়াং বলেন, এই দেশে মুসলিমদের জন্য প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা দরকার রয়েছে এবং দক্ষ উস্তাজ তৈরিরও প্রয়োজন রয়েছে। তাঁরা এ দেশের মুসলিম নাগরিকদের প্রকৃত ইসলামী শিক্ষা ও সৌহার্দ্যরে বিষয়টি ভালোভাবে শেখাবেন। এই ইউনিভার্সিটি সিঙ্গাপুরের মতো বহু সংস্কৃতির দেশে প্রতিষ্ঠা হওয়া খুবই প্রয়োজন। আমাদের বৈচিত্রময় সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে তাঁদের। এ দেশের মালয় মুসলিম ও অন্যান্য বংশোদ্ভূত মুসলিমদের সঙ্গে আমাদের অন্যান্য নাগরিকদের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।
মুসলিম সম্প্রদায় ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষায় আরও অগ্রসর হবে। বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে পারবেন তারা। উল্লেখ্য, বিশ্বের বৃহত্তম জিডিপির দেশ সিঙ্গাপুর। উন্নয়নের নিরিখে শীর্ষ তালিকায় রয়েছে এই ছোট দেশটি। এখানে মুসলিমদের সংখ্যা ১৫.৬ শতাংশ। আর বৌদ্ধ রয়েছেন ৩১ শতাংশ। মুসলিমদের মধ্যে মালয় মুসলিম ৮০ শতাংশ এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিমদের সংখ্যা ১৩ শতাংশ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। প্রথমে ধর্মীয় শিক্ষার উপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়। কেবলমাত্র দ্বীনি শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইসলামিক স্টাডিজ নিয়ে চার বছরের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্সও চালু হয়ে যায়। পরে মিশর, জর্ডন ও মরক্কোর ধাঁচে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর সেই বিষয়টি মিডিয়াকে জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার পর জানানো হয়, এখানকার প্রসিদ্ধ মসজিদে সুলতানের সৌ¨র্য্যায়ন ও সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আরও বেশি মুসল্লিদের জায়গা করে দেওয়া হবে এখানে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই এ দেশের প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এখানে নিজ নিজ ধর্ম, সংস্কৃতি পালনের মধ্য দিয়ে খুশিতে থাকুক। তাঁরা আরও ভালো অবদান রাখুক এই দেশের জন্য।