২০ এপ্রিল ২০২৫, রবিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বুলডোজারে সুপ্রিম তালা, রায়কে স্বাগত জানাল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার
  • / 14

নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন: বুলডোজার দিয়ে অবৈধভাবে বাড়ি ভেঙে ফেলার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বুধবারের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘বুলডোজার ন্যায়বিচার’-এর একটি ‘ল্যান্ডমার্ক’ হিসাবে বর্ণনা করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব (এআই) অ্যাগনেস ক্যালামার্ড আশা করেন যে, এর পর মানুষকে শাস্তি দেওয়ার নিষ্ঠুর এবং অমানবিক কাজ বন্ধ হবে। অবসান ঘটাতে হবে বেআইনিভাবে বাড়িঘর ও সম্পত্তি ভেঙে ফেলার অন্যায় কাজকে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, এই ধরনের বেআইনি ধ্বংস প্রায়শই বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরকারের সর্বোচ্চ স্তরে উস্কে দেওয়া হয়েছে, যা বারবার আইনের শাসন এবং যথাযথ প্রক্রিয়াকে ক্ষুন্ন করেছে। অ্যামনেস্টি  ইন্টারন্যাশনাল এর মহাসচিব  বিবৃতিতে বলেছেন, এই ধরনের অনাচারকে কখনই ‘বুলডোজার জাস্টিস’ হিসেবে উদযাপন করা উচিত ছিল না। তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আশা করে যে রায়টি ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, হয়রানি এবং সহিংসতার বৈষম্যমূলক প্রচারকে প্রতিরোধ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় চিহ্নিত করবে।

Read More: দুন স্কুল চত্বরে থাকা পুরানো মাজার ভেঙে দিল উগ্র গেরুয়া বাহিনী

অ্যাগনেস ক্যালামার্ডের মতে, দেশে এমন নিষ্ঠুর অন্যায় ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অসম এবং গুজরাত সহ বিভিন্ন রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাগুলিকে বহাল রাখুন। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক পদক্ষেপে নেবেন না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আহবান, ভারতীয় সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন উভয় লঙ্ঘন করে জোরপূর্বক উচ্ছেদ এবং নির্বিচারে শাস্তির শিকার ব্যক্তিদের অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। সবশেষে, যারা অবৈধ ধ্বংস অভিযানের অংশ ছিল তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করি এই রায় ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, হয়রানি এবং সহিংসতার প্রচারাভিযান রোধে একটি টার্নিং পয়েন্ট চিহ্নিত করবে। দেশে এই ধরনের গভীর অন্যায় ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়।’

বিচারপতি বিআর গাভাই এবং কেভি বিশ্বনাথনের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ  বেআইনিভাবে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়া,সম্পত্তি ধ্বংস করাকে অসংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে। শীর্ষ আদালত উল্লেখ করেছে যে প্রশাসনের একজন নির্বাহী বিচারক হতে পারেন না, তিনি একজন অভিযুক্তকে দোষী ঘোষণা করতে এবং তাদের বাড়িঘর ভেঙে দিতে পারেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘উচ্চ হাতের ও স্বেচ্ছাচারী’ বলে অভিহিত করে আদালত এগুলোকে অসাংবিধানিক এবং ‘সম্মিলিত শাস্তি’ বলে ঘোষণা করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ভারতের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আইন ও তার অনুশীলন বন্ধ হোক। প্রতিবাদ করার জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক প্রচার, তাদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে শাস্তিমূলক ধ্বংস অভিযান চালানো উচিত কাজ নয়।

Tag :

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বুলডোজারে সুপ্রিম তালা, রায়কে স্বাগত জানাল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার

নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন: বুলডোজার দিয়ে অবৈধভাবে বাড়ি ভেঙে ফেলার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বুধবারের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘বুলডোজার ন্যায়বিচার’-এর একটি ‘ল্যান্ডমার্ক’ হিসাবে বর্ণনা করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব (এআই) অ্যাগনেস ক্যালামার্ড আশা করেন যে, এর পর মানুষকে শাস্তি দেওয়ার নিষ্ঠুর এবং অমানবিক কাজ বন্ধ হবে। অবসান ঘটাতে হবে বেআইনিভাবে বাড়িঘর ও সম্পত্তি ভেঙে ফেলার অন্যায় কাজকে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, এই ধরনের বেআইনি ধ্বংস প্রায়শই বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরকারের সর্বোচ্চ স্তরে উস্কে দেওয়া হয়েছে, যা বারবার আইনের শাসন এবং যথাযথ প্রক্রিয়াকে ক্ষুন্ন করেছে। অ্যামনেস্টি  ইন্টারন্যাশনাল এর মহাসচিব  বিবৃতিতে বলেছেন, এই ধরনের অনাচারকে কখনই ‘বুলডোজার জাস্টিস’ হিসেবে উদযাপন করা উচিত ছিল না। তিনি বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আশা করে যে রায়টি ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, হয়রানি এবং সহিংসতার বৈষম্যমূলক প্রচারকে প্রতিরোধ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় চিহ্নিত করবে।

Read More: দুন স্কুল চত্বরে থাকা পুরানো মাজার ভেঙে দিল উগ্র গেরুয়া বাহিনী

অ্যাগনেস ক্যালামার্ডের মতে, দেশে এমন নিষ্ঠুর অন্যায় ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অসম এবং গুজরাত সহ বিভিন্ন রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাগুলিকে বহাল রাখুন। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক পদক্ষেপে নেবেন না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আহবান, ভারতীয় সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন উভয় লঙ্ঘন করে জোরপূর্বক উচ্ছেদ এবং নির্বিচারে শাস্তির শিকার ব্যক্তিদের অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। সবশেষে, যারা অবৈধ ধ্বংস অভিযানের অংশ ছিল তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশা করি এই রায় ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, হয়রানি এবং সহিংসতার প্রচারাভিযান রোধে একটি টার্নিং পয়েন্ট চিহ্নিত করবে। দেশে এই ধরনের গভীর অন্যায় ও বেআইনি কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়।’

বিচারপতি বিআর গাভাই এবং কেভি বিশ্বনাথনের সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ  বেআইনিভাবে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভেঙে দেওয়া,সম্পত্তি ধ্বংস করাকে অসংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে। শীর্ষ আদালত উল্লেখ করেছে যে প্রশাসনের একজন নির্বাহী বিচারক হতে পারেন না, তিনি একজন অভিযুক্তকে দোষী ঘোষণা করতে এবং তাদের বাড়িঘর ভেঙে দিতে পারেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে ‘উচ্চ হাতের ও স্বেচ্ছাচারী’ বলে অভিহিত করে আদালত এগুলোকে অসাংবিধানিক এবং ‘সম্মিলিত শাস্তি’ বলে ঘোষণা করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ভারতের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আইন ও তার অনুশীলন বন্ধ হোক। প্রতিবাদ করার জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক প্রচার, তাদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে শাস্তিমূলক ধ্বংস অভিযান চালানো উচিত কাজ নয়।