পুবের কলম ওয়েবডেস্ক : পূর্বতন রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা থেকে বিধাননগর পুরনিগম প্রায় তিন দশকের কাউন্সিলর ছিলেন তাপস চ্যাটার্জি। নারায়ণপুর এলাকায় তাঁর ওয়ার্ডটিও মুসলিম অধ্যুষিত। জনপ্রতিনিধি হিসাবে কবরস্থান থেকে ঈদগাহ সাজিয়ে দিয়েছেন উন্নয়নে। গড়ে দিয়েছে কুরবানিগাহ, যেখানে আসেপাশের এলাকার মুসলিমরা ঈদ-উল-আযহার দিন কুরবানি দিতে আসেন তাঁদের পশু নিয়ে। একেবারে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। মুসলিমদেরও খুব প্রিয় মানুষ তিনি। জনপ্রতিনিধি হিসাবে প্রতি বছর একটি বেশ বড়সড় ইফতার মজলিশের আয়োজন করে থাকেন। আর সেদিন ভোর থেকে তিনিও রোযা রাখেন আহার-পানীয় সম্পূর্ণ বর্জন করেই। এই প্রসঙ্গে তাপস চ্যাটার্জি বলেন, আমাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ।
প্রত্যেক জনপ্রতিনিধির উচিত সব ধর্মকে সমানভাবে মর্যাদা দেওয়া, সব ধর্মের মানুষের পাশে থেকে তাঁদের ধর্মাচারণে সহযোগিতা করা। আমি জনপ্রতিনিধি হিসাবে সেই কাজটা বরাবরই করে চলেছি। আর রমযান মাসটিকে আমি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখি। রমযান মাস আত্মশুদ্ধি, আত্মসংশোধন, আত্মসংযমের মাস। রমযানে এই যে রোযার ব্যবস্থা, আমার মনে হয় সংযম ব্রত পালনে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধারণা। আমি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করে দেখেছি, মুসলিমদের সঙ্গে মিলেমিশে এবং মাওলানাদের কাছ থেকে জেনেছি, শুধু খাদ্য-পানীয় ত্যাগ করলেই রোযা রাখা হয় না।
কামনা-বাসনা, ভোগ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ সব কুকর্ম ত্যাগ করতে হবে। তাহলেই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নৈকট্য লাভ সম্ভব। এই মাসটা আবার দান-ধ্যানের মাস। অর্থবানরা গরিব আত্মীয়-স্বজনদের অর্থ সাহায্য দেন, এটাকে আমার মনে হয় অর্থনৈতিক সমতা রক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যবস্থা। রমযান মাসে মানুষ নিজেকে সম্পূর্ণ পরিশুদ্ধ করে তুলতে পারেন। সবসময় আধ্যাত্মিক ভাবনার মধ্যে থেকে যাবতীয় খারাপ ভাবনাকে বর্জন করতে পারেন। আগে আমি কাউন্সিলর ছিলাম, আমার কাজের জায়গা ছোট ছিল। এখন বিধায়ক, সুতরাং পরিসর অনেক বেড়েছে। আমার বিধানসভা এলাকায় বিপুল সংখ্যক মুসলিম রয়েছেন। তাদের সুখে দুঃখে পাশে আছি। রমযান মাসেও তাদের পাশে থেকে আমি আমার কর্তব্য পালন করব, যেমনভাবে আগেও করে এসেছি। এবার ইফতার মজলিশও তাই আগের থেকে বড় আকারে হবে। এবারও সেদিন নিষ্ঠার সঙ্গে রোযা রাখব আমার মুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতেই।