গাজা, ১৮ অক্টোবর: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন বলে খবর। তবে এতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাসের প্রতিরোধের তেজ কমবে না। সিনওয়ারের মৃত্যুর পর হামাসের দায়িত্বে আসছেন প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য খালেদ মেশাল। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই খালেদ হামাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।
সূত্রগুলো বলছে, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নিহতের বিষয়টি তুরস্ক, কাতার এবং মিশরের কর্মকর্তাদের জানিয়েছে হামাস।
ALSO READ:২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে: আইন উপদেষ্টা
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, বুধবার গাজার রাফার একটি ভবনে হামাসের কয়েকজন যোদ্ধাকে প্রবেশ করতে দেখে ইসরাইলি সেনারা। এরপর সেখানে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। হামলার পর সেনারা সেখানে যাওয়ার পর সিনওয়ারের মতো দেখতে এক ব্যক্তিসহ মোট তিনজনের মরদেহ পায় তারা। এরপর বৃহস্পতিবার ইসরাইল জানায় মরদেহটি সিনওয়ারেরই ছিল।
কে এই খালেদ মেশাল?
হামাসের নেতৃত্বের গুরুভার কাঁধে তুলে নিয়েছেন হামাস আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা খালেদ মেশাল। ১৯৫৬ সালে সিলওয়াদের পশ্চিম তীরের একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন খালেদ মেশাল। মেশাল ১৯৭৪ সালে কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং শীঘ্রই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হন। তিনি ১৯৭৭ সালে ফিলিস্তিনি ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচনে ইসলামিক জাস্টিস লিস্টের নেতৃত্ব দেন। স্নাতক হওয়ার পরে মেশাল পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন।
এরপর ১৯৮৪ সালে হামাস গঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে রাজনীতিতে যুক্ত করেন। ১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সালে পর্যন্ত তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নির্দেশে মোসাদ এজেন্টরা তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে। মোসাদ এজেন্টরা জাল কানাডিয়ান পাসপোর্ট নিয়ে জর্ডানে প্রবেশ করেছিল এবং রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় মেশালকে বিষাক্ত পদার্থের ইনজেকশন দিয়েছিল।
জর্ডান সরকার এই হত্যা চেষ্টার বিষয়ে জানতে পারে এবং মোসাদের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে। জর্ডানের প্রয়াত বাদশাহ হুসেইন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের হস্তক্ষেপে নেতানিয়াহুকে প্রতিষেধক সরবরাহ করতে বাধ্য করায় এই হত্যা প্রচেষ্টা একটি রাজনৈতিক মাত্রা পায়। মেশাল ইসরাইলের সঙ্গে একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তির ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি পশ্চিম তীর, গাজা এবং পূর্ব জেরুসালেমকে নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করতে চান। মেশাল এখন দোহা ও কায়রোতে বাস করছেন। তাঁর জীবনের বেশিরভাগ কেটেছে ফিলিস্তিনের বাইরে।
1 Comment
Pingback: পৃথক হয়নি আরবি-ফারসি বিভাগ, সমস্যায় CU-এর গবেষক-পড়ুয়ারা