নিজস্ব প্রতিনিধি: বিধানসভা ভোট থেকে শুরু হয়েছিল। সদ্য সমাপ্ত রাজ্যের শতাধিক পুরসভার ভোটেও সেই ট্র্যাডিশন বজায় রয়েছে। শুধু লজ্জাজনক হারের স্বাদই যে পেতে হয়েছে তা নয়, জনসমর্থনের ভিতও ক্রমশ আলগা হচ্ছে। আবার দুয়ারে ভোট। আগামী ১২ এপ্রিল আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচন। দুই আসনে আদৌ জয়ের আশা করছে না বঙ্গ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। বরং দ্বিতীয়স্থান দখল করাই বড় চ্যালেঞ্জ। আসানসোলে দ্বিতীয়স্থান পাওয়া সম্ভব হলেও বালিগঞ্জে জামানত বাঁচানো যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।
অথচ তিন বছর আগে চিত্রটি ছিল ভিন্ন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বালিগঞ্জ বিধানসভা আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মালা রায় ভোট পেয়েছিলেন ৯৭ হাজার ৩০২ ভোট। আর বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসু পেয়েছিলেন ৪২ হাজার ৮৫০টি ভোট। বিধানসভা ভোটে সেই ভোট কমে দাঁড়িয়েছিল ৩১ হাজার ২২৬-এ। শতাংশের হিসেবে ২০ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন পদ্ম শিবিরের প্রার্থী আইনজীবী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায়। অর্থাৎ সামান্য ভোটে জামানত বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু কলকাতা পুরভোটে বালিগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত বিভিন্ন ওয়ার্ডে কার্যত ধরাশায়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। কলকাতা পুরসভার ৬০, ৬১, ৬৪, ৬৫, ৬৮, ৬৯ ও ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বালিগঞ্জ বিধানসভা আসনটি। সাতটি ওয়ার্ড মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা এক লক্ষ ১৫ হাজার ২৬৮ ভোট। বিজেপি প্রার্থীরা পেয়েছিলেন ১০ হাজার ১৫৭ ভোট। সবারই জামানত জব্দ হয়েছিল। বিজেপি প্রার্থীদের চেয়েও বেশি ভোট পেয়েছিলেন বাম প্রার্থীরা। বামেরা পেয়েছিল ১১ হাজার ২৪২ ভোট। অর্থাৎ পুরভোটের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট বালিগঞ্জে জামানত বাঁচানো দলের প্রার্থীর পক্ষে যথেষ্টই কষ্টকর হবে বলে বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষাতে উঠে এসেছে।
রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘বালিগঞ্জ বিধানসভা আসনের অন্তর্গত চারটি ওয়ার্ড কার্যত মুসলিম অধ্যুষিত। বাকি তিনটে ওয়ার্ডে অবাঙালি ও বাঙালি ভোটার রয়েছেন। অধিকাংশই শিক্ষিত, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী। ফলে তাঁদের ভোট পাওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। দলের কমিটেড ভোটার যাঁরা তাঁরা যাতে ভোটের দিন অন্তত বুথে যান, তার জন্য ঝাঁপানো হচ্ছে। বস্তি এলাকায় আস্তানা গেড়ে থাকা উদ্বাস্তু ভোটারদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থাকছে।’
তবে পুরসভায় কী ফল হয়েছে, তা মাথায় রাখতে চাইছেন না পদ্ম শিবিরের নেতারা। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘পুরসভায় ছাপ্পাভোটে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবারের উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট হবে। ফলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ভোট লুঠ করতে পারবে না। আর মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারলে আমরা ভাল ফল করব।