পুবের কলম প্রতিবেদক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৮ বছর আগে ‘কন্যাশ্রী’ নামে মেয়েদের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করেন। এই কন্যাশ্রী এবছর নবম বর্ষে পদার্পন করেছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রাজ্যে ৭২, ৪১, ৭৮১ জন ওই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। সোমবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে এমনটাই জানিয়েছেন নারী ও শিশুকল্যান দফতরের মন্ত্রী। ভগবান গোলার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ইদ্রিশ আলির এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ২২, ৭৯, ০০২ জন কন্যাকে বার্ষিক অনুদান বাবদ কন্যাশ্রী প্রকল্পে ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে রাজ্যের ৫, ২৫, ৬৩২ জন কন্যাকে এককালীন অনুদান হিসাবে ২৫০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
বিধায়ক ইদ্রিশ আলি আরও এক প্রশ্নে জানতে চান বর্তমান অর্থবর্ষে আর কতজন ছাত্রীকে কন্যাশ্রী ভাতা প্রদান করা হবে বলে আশা করা যায়। এই প্রশ্নের উত্তরে দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, বর্তমান অর্থবর্ষে ৩০, ২১, ৩৭৮ জন ছাত্রকী কন্যাশ্রী ভাতা প্রদান করা হবে বলে আশা করা যেতে পারে। রাজ্য বাজেট অধিবেশনে থেকে জানা গেছে, নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যান দফতর ২১-২২ সালে ‘অঙ্গনওয়াড়ি’ প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের ৬ বছর বয়স পর্যন্ত ৭৩.৯১ লক্ষ শিশু এবং ১৫.৩৭ লক্ষ গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের জন্য প্রতিমাসে নিজগৃহে রেশনের সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুষ্টি পূরনে কোন সমস্যা ননা হয় তার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে নারী ও শিশু কল্যান দফতর।
শিশু সুরক্ষা পরিষেবায় পিছিয়ে নেই রাজ্য সরকার। চলতি আর্থিক বছরে রাজ্য সরকার ৩৮৫৮ জন শিশুকে ১৯টি সরকার পরিচালিত এবং ৫২ টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত শৈশব আবাসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সমস্ত শৈশব আবাসগুলির মধ্যে ২১ টি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট।
রাজ্যে শিশুদের দত্তক নেওয়া সংক্রান্ত কাজের জন্য ৩টি সরকারী ও ২১ টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত ‘সাস’ নামে একটি সংস্থা কাজ করছে। চলতি অর্থবর্ষে ২০৭ জন শিশুকে দত্তকরুপে তাদের নতুন অভিভাবককে প্রত্যাপন করা হয়েছে যাদের মধ্যে ১৮৪ জন শিশু এদেশে এবং ২৩ জন শিশু অন্তঃদেশীয় দত্তকরূপে নতুন পরিবারে হস্তান্তর করা হয়েছে।
‘রুপশ্রী প্রকল্পে-র’ অধীনে চলতি আর্থিক বছরে ২.১১ লক্ষ বিবাহযোগ্য এবং দুস্থ পরিবারের মেয়েদের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে এক কালীন অনুদান দেওয়া হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আন্তর্গত বিধবা ভাতা প্রকল্প এবং বার্ধক্যভাতা প্রকল্পের অধীনের যথাক্রমে ৬, ৮০, ৫৬৪ জন ও ১৬, ৮৯,৬৫৭ জন সুবিধা ভোগীকে মাসিক ১০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়েছে। মানবিক পেনশন প্রকল্পে যাঁরা ৪০ শতাংশ অক্ষম তাদের মধ্যে ৪,৮৫,০০০ জনকে ৩৭৩ কোটি টাকার বেশি প্রদান করা হয়েছে। যা বর্তমান রাজ্যে নজীর সৃষ্টি করেছে।