ইমামা খাতুন: ‘তারিখ পে তারিখ’, শুনানি কিন্তু হচ্ছে না। কথা হচ্ছে ওবিসি-এ শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার। একের পর এক তারিখ ঘোষণা করলেও ‘অনিবার্য’ কারণবশত তা পিছিয়ে যাচ্ছে। পরপর ৬ বার তালিকায় নাম উঠলেও হেয়ারিং হয়নি। প্রতিবারের ন্যায় মঙ্গলবারেও তালিকায় নাম থেকে শুনানি পিছিয়ে যায়। বুধবার অর্থাৎ আজ মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তালিকায় ১৯ নাম্বারে রয়েছে ওবিসি সংক্রান্ত মামলার শুনানি। চাতকের ন্যায় ওবিসি মামলার শুনানির দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাংলায় পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু সমাজের ছাত্রছাত্রী ও চাকরিপ্রার্থীরা।
কিন্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও নানা কারণে শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে। কখনও বা রাজ্য সরকারের উকিল কপিল সিব্বল নিজেই প্রস্তুত হওয়ার জন্য আরও সময় প্রার্থনা করছেন। আবার কখনও বা সুপ্রিম কোর্টের তালিকায় এত পিছনে মামলাটি থাকছে যে, এই গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি এজলাসেই উঠছে না। মঙ্গলবারও যেমন মামলাটি ছিল তালিকার ২২ নম্বরে।
উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। সেই মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি হওয়া সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করতে হবে। যার জেরে বাংলায় ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি হওয়া প্রায় ৫ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হয়েছিল। উচ্চ আদালত জানিয়েছিল, সরকারি চাকরি বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে সংরক্ষণের জন্য ওই শংসাপত্রগুলি ব্যবহার করা যাবে না।
তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই ওই শংসাপত্র ব্যবহার করে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন, বা চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন, তাঁদের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না বলেও জানিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। এখন দেখা যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির তালিকায় মামলাটি থাকলেও তা তালিকার এত নিচের দিকে থাকে যে এই মামলাটি এজলাসে ওঠার সুযোগই পায় না।
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলায় প্রচুর মামলাকারী রয়েছে। একাধিক পড়ুয়া-সহ বহু মুসলিম সংগঠনও রয়েছে।
বলা বাহুল্য, গত ২২ মে হাইকোটের ওবিসি-সংক্রান্ত রায়ের ফলে বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষায় ভর্তি ও বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ ও জয়েনিং-এ নানান সমস্যার মধ্যে পড়ছে। এই ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশই প্রত্যন্ত পশ্চাদপদ মুসলিম সমাজের অন্তর্গত। যাঁদের একাংশ আবার প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী।
প্রায় ৫ লক্ষ সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ার কারণে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী অবস্থা শোচনীয়। নন ক্রিমিলেয়ার সার্টিফিকেটের জন্য উদভ্রান্তের মতো সরকারি অফিসে অফিসে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। ৭৭টি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট তা বাতিল করে দেয়। তারপরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।
READ MORE NEWS:আলিয়ায় একাধিক পদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি