পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইন্তেকাল করলেন প্রখ্যাত সুফি স্কলার ডঃ সৈয়দ শাহ খুসরো হুসাইনী (ইন্না লিল্লাহ)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০। বৃহস্পতিবার মাগরিব বাদ ওনার জানাজা নামায সম্পন্ন হয়। গুলবার্গ দরগা প্রাঙ্গণে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মরহুম সাজ্জাদা নাশীন হযরত সৈয়দ মুহাম্মদ মুহাম্মাদুল হুসাইনীর পুত্র ছিলেন ডঃ খুসরো হুসাইনী। স্ত্রী, দুই পুত্র ও তিন কন্যাকে রেখে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর ইন্তেকালে শোকের ছায়া নেমে এসেছে খাজা বান্দা নওয়াজ ইউনিভার্সিটি, খাজা বান্দা নওয়াজ মেডিকেল কলেজ সহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।
ডঃ খুসরো সুফিবাদ, ইসলামি শিক্ষা প্রসার এবং ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল নিপীড়িত মানুষের সেবায় নিজেকে নিমজ্জিত রেখেছিলেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ইসলামী শিক্ষা ও আধ্যাত্মিকতার একটি সম্মানিত কেন্দ্র হয়ে উঠেছে মরহুমের পরিবার। তিনিও এই উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। জীবদ্দশায় ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার মাধ্যমে মানুষকে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন তিনি।
তাঁর নেতৃত্বে গুলবার্গ শরীফ শুধু আধ্যাত্মিকতার কেন্দ্রই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার একটি স্থান হয়ে ওঠেছিল। খাজা বান্দা নওয়াজ ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে গুলবার্গ দরগা। এটি ভারতের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যা একটি দরগা দ্বারা পরিচালিত হয়। মরহুম খুসরো হুসাইনীর আব্বাজান ৫০ বছর আগে এই শিক্ষামূলক মিশন শুরু করেছিলেন। যা তিনি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করে গেছেন।
মরহুম খুসরো হুসাইনীর শিক্ষা ও উপদেশ অনেক অনুসারীর জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে। তার ইন্তেকাল শুধু মুসলিমদের জন্য না সমাজের বহু মানুষের হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করে গেছে। যারা তাঁর একাগ্র ও নম্র ব্যবহারের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। ইসলামী বৃত্তি এবং সুফিবাদে তার অবদান অনস্বীকার্য।
প্রসঙ্গত,ডঃ খুসরো হুসাইনী চিশতী ও সুফি ঐতিহ্যের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। প্রখ্যাত সুফি সাধক হযরত খাজা বান্দা নেওয়াজ (রহঃ) এর ২৩ তম বংশধর ছিলেন তিনি। ডঃ খুসরো কেবল গভীর আধ্যাত্মিকতার জন্যই নয়, তার বুদ্ধিবৃত্তিক অবদানের জন্যও ব্যাপকভাবে সম্মানিত ছিলেন। একজন একাডেমিক বিশেষজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে তিনি কেবিএন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আধুনিক প্রযুক্তি এবং সুফি ঐতিহ্যের মধ্যে সেতুবন্ধনের উদ্দেশ্যে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বর্তমান প্রজন্মের কাছে সুফি ঐতিহ্যকে পরিচিত করার জন্য দেশব্যাপী সম্মেলন ও অনুষ্ঠানের আয়োজনও লাগাতার করে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালের পর জ্যেষ্ঠ পুত্র, সৈয়দ শাহ আলী হুসাইনী এখন সাজ্জাদা নাশীন উপাধি ধারণ করলেন।