পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ ২৯ বছরের বিয়ে ভাঙছে অস্কারজয়ী এই শিল্পীর। এ আর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সায়রার বিচ্ছেদের খবর শুনে হতবাক অনুরাগীরা। প্রায় তিন দশক দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছেন এ আর রহমানের স্ত্রী সায়রা বানু। সায়রার আইনজীবী বন্দনা শাহ ইন্ডিয়া টুডেকে এই দম্পতির বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা জানান। তাঁদের বিচ্ছেদ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেন।
সেই বিবৃতিতে বলা হয়, বিয়ের বহু বছর পর স্বামী >এ আর রহমানের সঙ্গে বিচ্ছেদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সায়রা বানু। তাঁদের সম্পর্কের মধ্যে মানসিক চাপের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। একে অপরের প্রতি তাঁদের গভীর ভালবাসা সত্ত্বেও, এই দম্পতি খেয়াল করেছেন তাঁদের মধ্যে অনেক ব্যবধান, দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যা এই মুহুর্তে কোনও পক্ষই পূরণ করতে সক্ষম নয় বলে মনে করছেন তাঁরা। মিসেস সায়রা বানু বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তাঁর পক্ষে মোটেও সহজ ছিল না।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর ১০০ টি সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে ৩৯ টি ভারতের
অনেক ব্যথা ও যন্ত্রণা থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সায়রা বানু জানিয়েছেন, এই কঠিন সময়ে সকলের কাছে গোপনীয়তা রক্ষার এবং তাঁদেরকে একান্তে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন সায়রা বানু। ১৯৯৫ সালে সায়রা বানুর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন এ আর রহমান। তাঁদের তিন সন্তান খতিজা, রহিমা ও আমিন। তাদের ছেলে এ আর আমীন এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ভাব ব্যক্ত করেছেন। লিখেছেন মেয়ে খাতিজা ও রাহিমাও।
আমিন, এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে পারিবারিক বিষয়টি নিয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখার অনুরোধ জানান। এরপর রাহিমাও তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করেন লেখেন , তাঁদের পরিবার একটি কঠিন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । এই পরিস্থিতিতে সবাই যেন মর্যাদা রক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করেন। তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নেটিজেনদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত বিষয়টি নিয়ে যেন গোপনীয়তার মর্যাদা দেওয়া হয়। বিবেচনা করার জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন আগাম।
হিন্দু হয়ে জন্মানোর পরেও কেন মুসলিম হন >এ আর রহমান ? তাহলে কি সায়রা বানুকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যেই ধর্ম পরিবর্তন করেছিলেন তিনি? উঠছে প্রশ্ন।
এ আর রহমানের জন্মনাম দিলীপ কুমার। সুরকার বাবা আর কে শেখরের মৃত্যুর কিছু দিন পর এবং তাঁর প্রথম প্রকল্প ‘রোজা’ মুক্তির আগে তিনি সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর মা-ও নাম পরিবর্তন করে হন করিমা বেগম। এক সাক্ষাৎকারে এ আর রহমান বলেছিলেন, ধর্ম ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং জোর করে কারও ওপর নিজের ধর্মবিশ্বাস চাপিয়ে দেওয়ায় তিনি বিশ্বাসী নন। এ আর রহমানের বায়োগ্রাফি ‘নোটস অফ এ ড্রিম’ থেকে জানা যায়, প্রথম ছবি রোজা মুক্তি পাওয়ার ঠিক আগে ইসলাম ধর্ম নিয়েছিলেন শিল্পী। ১৯৬৭ সালের ৬ জানুযারি জন্ম হয়েছিল তাঁর।
বাবা ছিলেন আরকে শেখর মালায়ালম ও তামিল ছবির সঙ্গীত পরিচালক। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবা হারিয়েছিলেন তিনি। এরপর গোটা পরিবারের দায়িত্ব আসে ছোট্ট রহমানের উপরেই। বলা বাহুল্য বাবার মৃত্যুর পর তীব্র অর্থকষ্ট ও সামাজিক বঞ্চনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল এই লেজেন্ডকে। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই অর্কেস্ট্রা দলের সঙ্গে বাজাতে শুরু করেন কি-বোর্ড।
রহমানের যখন ২২ বছর বয়স, তখন তার বোন কঠিন অসুখে আক্রান্ত হন। এরপর এক সুফি পীরের চেষ্টায় বোন সুস্থ হয়ে ওঠেন। আর সেই অভিজ্ঞতা তাঁদের জীবনে ছাপ ফেলে দেয়। তারপর ৯০ এর দশকে গোটা পরিবারই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সুরকারের বয়স যখন ২৩ বছর তখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের বহু বছর পর সঙ্গীতশিল্পী ও >সায়রা বানু বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন।