আবদুল ওদুদ : আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলছে। চারিদিকে কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে। সর্বত্র হাহাকার, মানুষের ছোটাছুটিও আর্তনাদ সব কিছুকে ঢেকে দিচ্ছে । আর তার মাঝে জান-মাল রক্ষার তাগিদে কণ্ঠছেড়ে আযান দেন যুবক। যা হৃদয় ছুঁয়ে যায় বহু মানুষের। সেই আযান এর ভিডিয়ো এখন সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। শনিবার সন্ধ্যায় দমকলের ১৫ থেকে ১৬ টি ইঞ্জিন প্রাণপণ আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়েছিল। রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু নিজে দাঁড়িয়ে কাজের তদারকি করেছেন। ঠিক সেই সময়ই অনেকের কানে ভেসে আসে আযানের ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি।
ট্যাংরা জনবহুল এলাকা। যেভাবে আগুন লেগেছিল তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছিলেন অনেকে । এই আযান কিছু মানুষকে যেমন সাবধান করেছিল, তেমনই অনেককে আত্মবিশ্বাসী করেছিল। শত শত মানুষ তখন আগুন নেভাতে ব্যস্ত। তাদের মাঝে দাড়িঁয়ে বিধ্বসী আগুন থেকে এলাকাকে বাঁচাতে আযান দেন এক যুবক। এই ভিডিয়ো এখন সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
ট্যাংরার রেস্কিনের গুদামের আগুন ভয়াবহ আকার নেওয়ায় দমকল বিভাগও বেশ বেকায়দায় পড়েছিল। কোনওভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছিল না। সেই সময়ে মনে প্রাণে অনেকেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ বা ঈশ্বরকে ডাকছিলেন । অনেকেই বলছিলেন ‘আমরা ভীষণ বিপদে রয়েছি, আল্লাহই পারেন আমাদের রক্ষা করতে।’
আযানের ‘আল্লাহু আকবর ধ্বনি’ অনেকেরই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল। আযান শুনে তারা মন করছিলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সহায় হবেন।রবিবারও ট্যাংরার সেই গুদামের চিত্র ছিল একেবারে করুণ। পুড়ে সমস্ত কিছুই খাক হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১৬ ঘণ্টার লাগাতার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। সমস্ত কিছু পুড়ে যাওয়ার মাঝে দাঁড়িয়ে কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলছেন। আগুনের লেলিহান শিখা যেভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছিল, তাতে ট্যাংরার চিত্র পাল্টে যেতে পারত। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার করুণায় রক্ষা পেয়েছেন অনেকে। এই আযানের ধ্বনী ধর্ম নির্বশেষে বহু মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে ।
বিপদের সময় আযান দেওয়া প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা ইসহাক মাদানী বলেন, ‘আযান দেওয়া হয়, নামাযের জন্য। কিন্তু হাদীসে আছে প্রবল ঝড়, বৃষ্টি অথবা দুর্যোগের সময়ও আযান দেওয়ার কথা রাসূল (সা.) বলেছেন।’জনাব ইসহাক মাদানী বলেন, আল্লাহ পারেন আমাদের সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করতে । ট্যাংরার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষরাও সমস্ত কিছু রক্ষার জন্য আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করছেন। আল্লাহ সেই প্রার্থনা শুনেছেন ।