সেখ কুতুবউদ্দিন: স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ ও পরিকাঠামোর অভাবে সমস্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি এবং ফারসি বিভাগ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের গবেষক আবদুল ওহাব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগে পড়ুয়ার আসন ১২০টি। আর স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৩ জন। অস্থায়ী শিক্ষক ৬ জন। ফারসি বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা ২ জন। এর মধ্যে অস্থায়ী শিক্ষক ৫ জন। ফারসিতে ৪০ জন।
আরবি বিভাগের বিভাগীয় প্রাক্তন প্রধান মুহাম্মদ আশরাফ আলি বলেন, কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে আরবি ফারসি বিভাগ আলাদা হলে ভালো।
ALSO READ:হামাসের নতুন প্রধান হলেন খালেদ মাশাল
আরবি এবং ফারসি বিভাগকে আলাদা করা হয়েছিল। সেই অনুসারে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি বের হওয়ার পরও সেই উদ্যোগ বিশবাঁও জলে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগ পৃথকভাবে রয়েছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গোল্ড মেডেল পৃথকভাবে প্রতি বছর প্রদান করা হয়। কিন্তু আরবি এবং ফারসি বিভাগে আলাদাভাবে গোল্ড মেডেল মেলে না। এক বছর আরবি বিভাগকে। আর অন্য বছর ফারসি বিভাগকে গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়। এতে বঞ্চিত হয় আরবি এবং ফারসি বিভাগের পড়ুয়ারা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি এবং ফারসি বিভাগের গবেষকদের জন্য পৃথক কোনও বসার জায়গা নেই। পাশাপাশি কোনও কনফারেন্স হলও নেই। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে বলে জানান পড়ুয়ারা।
বিজ্ঞপ্তির পর দীর্ঘদিন ধরে দাবি উঠলেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি এবং ফারসি বিভাগ এ’নও পৃথকীকরণ হয়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বিভাগ আলাদা করার উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি। তৎকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যুক্তি ছিল, দুই বিভাগ আলাদা করার কোনও বিষয় নয়, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার মাধ্যমে এগিয়ে দিতে হবে। দুই বিভাগকে আলাদা করা হলে, ফারসি বিভাগের পড়ুয়ার সংখ্যা কমবে।
এতে, ফারসি বিভাগ সঙ্কটে পড়তে পারে।
এই বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন, পালি, বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ বিষয়ে ছাত্র সংখ্যা ফারসি বিভাগ থেকেও কম। তাহলে সেই বিভাগকে আলাদা করা হলো কেন। ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, দুই বিভাগে আলাদা ভাষা নিয়ে পড়াশোনা হয়। এক ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষার মিল নেই। দুই ভাষাকে এক রা’লে ছাত্রছাত্রীদেরই অসুবিধা থেকেই যাবে। তাছাড়া দুই বিভাগ আলাদা হলে গবেষণা সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বরাদ্দ আরও বাড়বে, এতে অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও পাবেন পড়ুয়ারা।
পড়ুয়াদের বক্তব্য, বৌদ্ধ, পালি, বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ, ওমেন স্টাডিজ বিভাগ আলাদা হয়েছে।
তাই আরবি ফারসি বিভাগের পড়ুয়াদের সুবিধার জন্য বারবার কর্তৃপক্ষকে আলাদা করার বিষয়ে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি আন্দোলনও হয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলনের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিনারে তৎকালীন উপাচার্য সুগত মারজিত দুই বিভাগ আলাদা করা এবং এমফিল চালু করা নিয়ে সিন্ডিকেটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেন। তবে দুই বিভাগ আলাদা করার সিদ্ধান্ত কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি এবং ফারসি বিভাগ আলাদা করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগে এমফিল চালু করার দাবিও ওঠে।
পড়ুয়াদের দীর্ঘদিনের এই দাবি সিন্ডিকেটের বৈঠকে পাশও করেন তৎকালীন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে ছাত্রভর্তি নেওয়ার বিজ্ঞপ্তিও জারি করে। এমফিলেও ভর্তি নেওয়ার আবেদন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভাগ আলাদা না হলেও এমফিলে ছাত্রভর্তি নিতে পারে বিভাগীয় প্রধানরা। এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক্ষের আপত্তি নেই। শিক্ষকদের বক্তব্য, শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে, ক্লাসের সংখ্যাও কম। এই প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, এমফিল অথবা গবেষণায় ভর্তি নেওয়া যেতেই পারে। গবেষণার কাজে আলাদা ক্লাস রুমের প্রয়োজনীয়তাও বাধ্যতামূলক নয়। তবে ক্লাসরুম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ভাবা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
1 Comment
Pingback: জাপান ৪২১ তলা ভবন: বুর্জ খলিফাকে ছাড়িয়ে যাবে স্কাই মাইল টাওয়ার!