পুবের কলম প্রতিবেদক: সম্প্রতি দেশজুড়ে বেড়ে চলেছে মুসলিম বিরোধী সহিংসতা। যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জামাআতে ইসলামী হিন্দ। সংগঠনের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কয়েকদিন আগে একদিনেই ৮-৯ রাজ্যে সহিংসতার এমন খবর পাওয়া গেছে। মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থান-বিহার-ঝাড়খণ্ড-গুজরাত-উত্তরপ্রদেশ-ছত্তিশগড় ও গোয়াতে এ সকল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এইসব জায়গায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় শোভাযাত্রায় তলোয়ার খেলা হয়েছে। ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা হয়েছে। অনেক মসজিদের ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় মুসলমানদের ব্যবসা ও সম্পদের ওপর হামলা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
জামাআত মনে করে- এইসব ঘটনায় প্রমাণিত হয় সারাদেশে অশান্তি ও ঘৃণার পরিবেশ বেড়ে চলেছে। সবথেকে দুঃখের বিষয় হল, কোনও কোনও রাজ্য সরকার বিশেষ গোষ্ঠীর পক্ষ নিয়ে চলেছে। অথচ সরকারের কর্তব্য হল সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সবার জন্য সুবিচারের ব্যবস্থা করা। জামাআতের অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উলটে অত্যাচারিতদেরই বিরুদ্ধে টার্গেট করা হয়েছে। নির্দোষ মুসলিম যুবকদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে মুসলমানদের ঘর-বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
জামাআতের সহ-সভাপতি মহম্মদ সেলিম বিবৃতিতে বলেন, জামাআত এইসব ঘটনাকে কড়া ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছে। সারা দেশে সহিংসতার জন্য কোনও কোনও রাজনৈতিক নেতাদের আগুনঝরা বক্তব্য দায়ী। এদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, লাগাতার এসব ঘটনায় সরকার ও প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা কমে যাচ্ছে।
জামাআতের দাবি, কেন্দ্র সরকারের দায়িত্ব যেসব রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে নোটিশ দিক। যেসব পুলিশ অফিসার এতে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেলিম আরও বলেন, জামাআত প্রথম থেকেই এসব এলাকায় শান্তি রাখার চেষ্টা করে এসেছে। রাজ্য সরকার ও পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে এসেছে। মধ্যপ্রদেশে যে জায়গায় বড় ঘটনা ঘটেছে সেখানে জামাআতের প্রতিনিধিদল গিয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাত করে শান্তি কায়েমের প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
যেসব রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে সেখানে জামাআত সভাপতি সাদাতুল্লাহ হোসাইনি গিয়ে সেই রাজ্যের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করেছে জামাঅত। একইসঙ্গে আইনি মদদও দেওয়া হয়েছে।
জামাআতের তরফে মুসলিমদের কাছে আবেদন করা হয়েছে, তারা যেন ধৈর্য্য ও প্রজ্ঞার সঙ্গে সব কাজ করেন এবং সুবিচারের পক্ষ অবলম্বন করে। মানসিক চাপের শিকার না হয়। আইনের আশ্রয় নিয়ে এবং ইনসাফপ্রিয় মানুষদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে। নবী করিম (সাঃ)-এর আদর্শকে যেন ভুলে না যায়। রমযান মাসে দেশে শান্তি রক্ষার জন্য আল্লাহর কাছে দোওয়া করে। শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং ঘৃণা, সহিংসতার বন্ধে এবং উৎসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিবেশকে বিষাক্ত না করার কাজে সক্রিয় যেন তারা হয়।