Sat, June 29, 2024

ই-পেপার দেখুন

ভারতে কমছে শিশু জন্মের হার, আগামীদিনে ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে দেশ

Bipasha Chakraborty

Published: 26 June, 2024, 04:24 PM
ভারতে কমছে শিশু জন্মের হার, আগামীদিনে ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে দেশ


 ২০৫০ সাল নাগাদ ভারতে প্রজনন হার দাঁড়াবে ১.২৯
নয়াদিল্লি, ২৬ জুন: বিশ্বের অন্যতম জনবহুল একটি দেশের নাম ভারত। ভারতে শিশু জন্মের হার ক্রমশ কমেছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে নিম্ন প্রসবের  হার, বার্ধক্য, দেরিতে বিয়ে। সেইসঙ্গে কমেছে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের হার। 
১৯৫০ সালে ভারতের জন্মহার ৬.১৮ যা ১৯৮০ সালে ৪.৬ নেমে আসে, ২০২১ সালে মহিলা প্রতি শিশুদের গড়সংখ্যা ২.১। এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ ভারতে প্রজনন হার দাঁড়াবে ১.২৯।  
ল্যানসেটের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত আগামী কয়েক দশকে উল্লেখ্যযোগ্য জনসংখ্যা হ্রাসের মুখোমুখি হতে পারে। 
পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার (পিএফআই) নির্বাহী পরিচালক পুনম মুত্রেজার মতে, দেশগুলি অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হওয়ার সঙ্গে শিশুদের লালন-পালন করার খরচ বেড়ে যায়। যার ফলে পরিবারগুলি কম সন্তানের জন্ম দেয়। বর্ধিত শিক্ষা এবং মহিলা ক্ষমতায়নের ফলে কর্মজীবনের উচ্চাকাঙ্খা ও দেরিতে বিয়ে, জনসংখ্যা হ্রাসের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। এই অবস্থার অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে নগরায়ন, পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভনিরোধক, ছোট পরিবারের দিকে লক্ষ্য প্রভৃতি। পিএফআই ডিরেক্টর মুত্রেজা বলেছেন, সময়ের সঙ্গে প্রয়োজন লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা। সরকার ও সমাজকে মহিলাদের জন্য মাতৃত্বের খরচ কমানো প্রয়োজন। 
ল্যানসেট রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী গর্ভধারণ ক্ষমতার হার ২০৫০ সালের মধ্যে ১.২৯-এ নেমে আসবে। ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী গর্ভধারণের ক্ষমতা হবে ১.৬। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে ভারতে ১.৬ কোটি শিশুর জন্ম হয়। ২০২১ সালে ভারতে ২.২ কোটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। সমীক্ষা অনুসারে, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ১২.৯ কোটি শিশুর জন্ম হয়েছে। এই সংখ্যা ১৯৫০ সালে বিশ্বব্যাপী জন্মগ্রহণকারী ৯৩ মিলিয়ন শিশুর চেয়েও বেশি। অন্যদিকে ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ১৪.২ কোটি শিশুর কম।
চিকিৎসকদের মতে, প্রজনন হার কমে যাওয়ার বড় কারণ হল আগের চেয়ে দেরিতে বিয়ে হওয়া। বেশি বয়সে বিয়ের কারণে সন্তান পরিকল্পনাতেও দেরি হচ্ছে। সেই কারণে কমে যাচ্ছে প্রজনন হার। বর্তমান সময়ে দম্পতিরা আগের তুলনায় কম সংখ্যক সন্তান নিতেই উৎসাহী। চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা না করা হলে পরবর্তীকালে ঝুঁকি বাড়তে পারে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণ অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। সারা বিশ্বে প্রজনন সংক্রান্ত একাধিক চ্যালেঞ্জ উঠে আসছে সাম্প্রতিক সময়ে। চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা না করা হলে পরবর্তীকালে ঝুঁকি বাড়তে পারে। 
তবে ভারতই একমাত্র দেশ নয়, যেখানে কম জনসংখ্যার হারের কারণে জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কম শিশু জন্মালে দেশের জনসংখ্যা কমবে, সুফল পাওয়া যাবে। জানা উচিত যে প্রজনন হার হ্রাসের একাধিক অসুবিধাও রয়েছে।
গবেষকদের মতে, শিশু না থাকলে যে কোনও দেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়তে পারে। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রজনন হার কমে গেলে, শিশুদের থেকে বয়স্কদের আধিক্য চোখে পড়বে। প্রজননের হার কমে গিয়ে দেশে বয়স্কর হার বেড়ে গেল শ্রমশক্তির ঘাটতি হবে। বিশ্বব্যাপী প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের অর্থ হল অর্ধেকেরও বেশি দেশে জন্মহার কমে যাওয়া। যখনই কোনও দেশে প্রজনন হার ২.১-এর নীচে নেমে আসে, তখনই কমতে থাকে জনসংখ্যা। 

Leave a comment