পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ দেশের উচ্চ শিক্ষার কঙ্কালসার চিত্র প্রকাশ্যে এল। একদিকে ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট দূর্নীতির প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে যখন বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের জুন মাসের নেট পরীক্ষা বাতিল বলে ঘোষণা করল স্বয়ং কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। পাশাপাশি সিবিআইয়ের উপর এই বিষয়টির তদন্তভারও তুলে দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছতার প্রশ্নে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

গতকালই ইউজিসি-নেট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদের জন্য এবং জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। ১৮ জুন মঙ্গলবার দুই শিফটে ৯ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরীক্ষায় বসেছিলেন। ওএমআর শিটের মাধ্যমেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) এই পরীক্ষা নিয়েছিল।

কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে ফের এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে কবে সেই পরীক্ষা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনই কিছু জানানো হয়নি। পরবর্তী সময়ে এই বিষয়ে তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রক থেকে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, ওই পরীক্ষায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। বুধবার ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম থ্রেট অ্যানালাইসিস ইউনিটের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়েছে ইউজিসি। সেখানে জানানো হয়েছে যে, ওই পরীক্ষায় বেশ কিছু অনিয়ম হয়েছে। তারপরেই স্বচ্ছতার প্রশ্নে পুরো পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে চলতি বছরের নিট পরীক্ষা বাতিল করার দাবি জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির কাছে জবাব তলব করে শীর্ষ আদালত। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, "পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা জবাব চাই।"

নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের স্বস্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নিট নিয়ে গড়মিলের অভিযোগে দায়ের হয়েছে একাধিক আবেদন। তাতে যেমন কাউন্সেলিং বন্ধ করার দাবি করা হয়েছিল, তেমনই অবিলম্ব সিবিআই তদন্ত চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই আবেদনে সাড়া দিল না। তাই আপাতত কাউন্সেলিং বন্ধ হচ্ছে না। সেই সঙ্গে এখনই সিবিআই তদন্তের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না দেশের শীর্ষ আদালত। সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার অবকাশকালীন বেঞ্চের মত, সব পক্ষের কথা না শুনে অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া যাবে না। নিট সংক্রান্ত চারটি মামলার প্রেক্ষিতে এনটিএ-কে নোটিশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। ওই নোটিশের জবাব দু'সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ জুলাই।

একের পর এক বেনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক কাঠগড়ায়। দেশের উচ্চ শিক্ষার ভবিষ্যৎ  নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।