পুবের কলম প্রতিবেদক: গত শনিবার রাজ্যের ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য ভবনকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থসাথী কার্ডের বকেয়া মেটানোর আবেদন জানানো হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই সেই সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিল রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন। রবিবার স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কোনও রোগী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এলে তাঁকে কোনও মতেই ফেরানো যাবে না। উল্লেখ্য, রাজ্যের সাধারণ মানুষকে উন্নতমানের এবং বিনাপয়সায় চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প। এর মাধ্যমে একটি পরিবার বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বিমার সুযোগ পান। এতে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা করানো যাবে।
অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলি রোগী ফেরাচ্ছে। অনেক সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ না করারও অভিযোগ ওঠে। এরই মধ্যে শনিবার বেসরকারি হাসপাতালগুলির অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছিল রাজ্যের কাছে তাদের অনেক টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা না মেটালে চিকিৎসা পরিষেবা দেওযা সম্ভব নয়। তবে সরকার যে মানুষের অসুবিধার ঘটনাকে রেয়াত করবে না, তা বলা বাহুল্য। বেসরকারি হাসপাতালগুলির গা-জোয়ারি মনোভাবের পর কড়া অবস্থান জানাল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান না করলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে রাজ্য। এমনই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাসপাতালগুলির বিল পরিশোধ করে। তবে যে ক্ষেত্রে বিতর্কিত বিষয় থাকে, সেক্ষেত্রেই পেমেন্টের জন্য দেরি হয়। অনেক সময় অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিল জমা করে হাসপাতালগুলি তার জন্যেই বিল আটকে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত বিল জমা দেওয়া আটকাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন কিছুদিন আগে চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য চার্জ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল।
সম্প্রতি ২০টি বেসরকারি হাসপাতালের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’ রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে স্বাস্থ্যসাথী’ বকেয়া পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। টাকা না পেলে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয় বলেও তারা জানিয়েছে। রাজ্য সরকার অবশ্য সেই বিষয়ে চিন্তিত নয়। রাজ্যের পক্ষ থেকে টাকা দেওয়া হবে, তবে কোনোভাবেই চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করা মেনে নেওয়া হবে না। এমনটাই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা।
সূত্রের খবর সরকারি নিয়ম অমান্য করবে এমন বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটবে রাজ্য।