পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ গঙ্গাসাগর মেলা আজই অবস্থান আদালতে জানাবে রাজ্য সরকার। গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্যেকে তাদের মতামত স্পষ্ট করার জানায় হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো নাগাদ গঙ্গাসাগর নিয়ে মতামত জানাবে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, কোভিড পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন অভিনন্দন মণ্ডল নামে এক আইনজীবী। মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে।
করোনা আবহে ভোট নেওয়া ঠিক হবে না কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলায় এমনই আবেদন করা হয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলা নিয়েও মামলা হয়। সেই মামলার শুনানিতে মেলা নিয়ে বুধবার রাজ্য সরকারের মতামত জানতে চাইল আদালত। করোনা পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা হলে ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে– চিকিৎসকরা এভাবেই সতর্ক করছেন। এবার সেই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যের কাছে আদালত জানতে চাইল– মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় কি না। যদি বন্ধ করা না হয়– তবে সরকার কি পদক্ষেপ করছে? সরকার তাও জানাতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। এ দিন ছিল শুনানি। তাতে মেলা বন্ধ করা যায় কি না– বা রাজ্য কী চাইছে তা জানাতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে– প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে মামলার শুনানি হয়। মামলাকারীর তরফে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। রাজ্য এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও সবার স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করছে আদালত। জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোর মধ্যে অ্যাডভোকেট জেনারেল রাজ্যের বক্তব্য জানাবেন। মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় কি না– তাও জানাতে বলা হয়েছে। এবার দেখার রাজ্য প্রশাসন কি চাইছে।
উল্লেখ্য– বুধবার মামলার শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গ চিকিৎসক ফোরামের পক্ষ থেকে মামলায় অংশ হওয়ার আবেদন জানানো হয়। জানা গিয়েছে– মামলাকারী অভিনন্দন মণ্ডল দক্ষিণ দমদমের একটি সেফ হোমে চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানান– করোনা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা ভয়ংকর। চিকিৎসকের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান– কুম্ভের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হয় গঙ্গাসাগরে। এতে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের জনসমাগম হওয়ার কথা। ফলে এত লোকের মধ্যে সংক্রমণ আটকানো নিয়ে সন্দেহ আছে। এ দিন আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী উল্লেখ করেন– ৫০ শতাংশ পুলিশ শুধু গঙ্গাসাগরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন– কোনওভাবে তাঁরা আক্রান্ত হলে আইন-শৃঙ্খলার কী হবে? তিনি আরও উল্লেখ করেন– সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশে সাম্প্রতিককালে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয় গঙ্গাসাগর মেলা আইনে বলা হয়েছে– রাজ্য সরকার মনে করলে সাগরের যেকোনও জায়গার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইস্যুতে পদক্ষেপ করতে পারে।
জানা গিয়েছে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আইনজীবী অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় জানান– আসলে তাঁরা ডেল্টাকে ভয় পাচ্ছেন। গঙ্গাসাগরের কাছে হাসপাতালের পরিকাঠামো কী– তা জানতে চান তাঁরা। আদালতে বলা হয়েছে– রাজ্যের প্রায় চার-পাঁচশো চিকিৎসক ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত। সাধুরা মাস্কে বিশ্বাসই করেন না। কে মাস্ক পরানোর দায়িত্ব নেবে? বলেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সব পক্ষের কথা শুনে এ দিন প্রধান বিচারপতি রাজ্যের মতামত জানাতে বলেন।