পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে এখনও দেশের সেবাতেই নিয়োজিত রেখেছেন নিজেকে। ৩৫ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। চিকিৎসকের দায়িত্বও সামলেছেন। ব্রিগেডিয়ার পদেও সেবা করেছেন। এখন অবসরের পর ৮০ বছর বয়সেও মানবসেবা করে যাচ্ছেন। পুণের এই ব্রিগেডিয়ার এখন দেশের কাছে সমাজের কাছে এক আদর্শ। তিনি বলেন, হিংসার মোকাবিলা হিংসা দিয়ে করা যায় না। প্রেম, করুণা ও আত্মত্যাগই মানুষকে, দেশকে মহান বানাতে পারে। জ্ঞান, বুদ্ধি ও শিক্ষার উপর অত্যধিক জোর দিয়ে চলেছেন। স্কুলছুটদের দেখছেন। স্টাইপেন্ড দিয়ে পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। পুণের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন নিম্নবিত্তদের। বাড়ির কাছের স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন স্কুলছুট হচ্ছে কিনা, আর কেন হচ্ছে। নিজে ব্রিগেডিয়ার তাই কড়া মেহনতের কথা বলছেন। সততা, দৃঢ় সংকল্প, প্রতিবদ্ধতার উপর জোর দিতে বলছেন। অন্ধকারের মাঝে আলো জ্বালানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। ডাক্তার হওয়ার জন্য বা ব্রিগেডিয়ার হওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন।
নিজে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ হলেও তাঁর সাহিত্য চর্চা ও কাব্য প্রেম দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। ডা. আলমের ‘মজমুয়া মজামীন কুরআন মজীদ’ উর্দুতে কবিতার আকারে কুরআন শরীফ প্রকাশ এক কথায় অনবদ্য। হিন্দিতেও কবিতার ভাষায় কুরআন অনুবাদ করেছেন। নাম দিয়েছেন ‘কুরআন মজিদ কা কাব্য সার’। হিন্দি ভাষিদের কুরআনের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য তাঁর এই উদ্যোগ প্রশংসা পেয়েছে। তিনি ৫০টির বেশি গবেষণাপত্র লিখেছেন, আর তাঁর লেখা বইয়ের সংখ্যা ২১। দেশ-বিদেশ থেকে বহু পুরস্কার পেয়েছেন। ডা. আলম বলেন, ইসলাম নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করতে চায়। ইসলাম কখনোই হিংসা, রাগ ও বর্বরতার অনুমোদন দেয় না। শান্তির ধর্ম ইসলাম। ইসলামের প্রকৃত অনুসারীরা প্রেম ও করুণার মূর্ত প্রতীক। তাঁর মতে, অনুশাসন মেনেই জীবনের মহত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বিকাশ করা সম্ভব। অনুশাসন মেনেই ঈমানদার হওয়া সম্ভব বলে তিনি যুব সমাজকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর মতে, যুবরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের অনুশাসনহীনতা থেকে সরে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ইহকালে, পরকালে আন¨ ও মুক্তির স্বাদ পেতে হলে নিষ্ঠা, ধৈর্য ও ঈশ্বরে গভীর বিশ্বাস একান্ত প্রয়োজন। ভারতে বিবিধতার মাঝে মিলনকে সম্মান জানাতে তিনি এই বয়সেও কোশেশ করে চলেছেন। চিকিৎসার ফাঁকে গরিব ছাত্রছাত্রীদের খুঁজে এনে ছাত্র বৃত্তির ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন নিজের সাধ্যমতো। এমনকি সময় পেলে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর জন্য সময়ও ব্যয় করছেন। তাদের ইউনিফর্ম, বই, খাতা, ব্যাগ এসবও ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। গোপনে সমাজসেবা তাঁর কাছে বেশি পছন্দ। মিডিয়াকে এড়িয়ে থাকতে চাইলেও আওয়াজ দ্য ভয়েস তাঁর সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করে পাঠকদের জানিয়ে দিল সমাজসেবা কোনও বয়স মানে না, ৮০ বছর বয়সেও যৌবনের তৎপরতা পালন করা যায় ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করে।