ঢাকা, ২ নভেম্বরঃ বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের পর শেখ হাসিনা ঢাকা ছেড়ে পালিয়েছেন গত ৫ আগস্ট। তারপর থেকে দেশটিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে আওয়ামি লিগের সমর্থকরা- এমনটাই দাবি দেশটির গণমাধ্যমগুলির। এমনকী ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানও এই অভিযোগ তুলেছেন।
সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন হচ্ছে, এই ইস্যু খাড়া করে ভারত-আমেরিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে তারা। পাশাপাশি, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপর গেরুয়া পতাকা ওড়ানোয় ইসকন নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে ইতিমধ্যে। ইসকন সংগঠনটি ভারতেও আছে।
কৃষ্ণনগরের মায়াপুরের ইসকন বাংলায় সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে থাকে। কিন্তু ওপার বাংলায় এমন কী ঘটছে যে তাদেরকে নিষিদ্ধের দাবি উঠছে, এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কূটনীতিক মহলে। বিভিন্ন গণমাধ্যম, সোশ্যাল সাইটে দাবি উঠছে বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। ড. ইউনূস সরকার অবশ্য এতে কান দিচ্ছে না। তবে দাবি দিন-দিন জোরালো হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে হিংসা, রাষ্ট্রদ্রোহ, মুসলিমদের ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। তবে ইসকনের কর্তারা সহজে মচকাচ্ছেন না। তারাই উলটে তোপ দেগেছেন সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে। তাঁকে সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে ইসকন। অন্যথায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া-সহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছে সংঘটি।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী এ কথা বলেন। সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘আমরা সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন বলেছেন।
তিনি আমাদের ‘র’-এর এজেন্ট বলেছেন। ছাত্রলিগের সঙ্গে জড়িয়েছেন। ওনাকে এসব প্রমাণ করতে হবে। আর প্রমাণ করতে না পারলে ক্ষমা চাইতে হবে। ইসকন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হিন্দুধর্ম প্রচার করে। আমরা আমেরিকা, রাশিয়া বা কোনও দেশের গোয়েন্দা সংস্থা নই।’
চারুচন্দ্র বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, সম্প্রতি বিভিন্ন মহল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসকন বাংলাদেশকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়াচ্ছে। যেমন— সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসমূহে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে যে ছবি বা পতাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ইসকনের কোনও নিজস্ব পতাকা নেই। যে পতাকাটি দেখানো হয়েছে, তার সঙ্গে ইসকনের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। ইসকন বাংলাদেশ তার সকল কর্মকাণ্ডে আইন ও শৃঙ্খলা মেনে চলে এবং বাংলাদেশে শান্তি, সহনশীলতা ও ধর্মীয় ঐক্য বজায় রাখার জন্য দৃঢ়নিষ্ঠ।’