পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিবেক দেবরায়ের জীবনাবসান। শুক্রবার সকালে দিল্লি এইমসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর প্রয়াণ বলে জানা গিয়েছে। মোদি জমানায় ভারত সরকারের বহু গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন বিবেক দেবরায়। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘ড. বিবেক দেবরায় অত্যন্ত বিদ্বান মানুষ ছিলেন। অর্থনীতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান ছিল তাঁর। কাজের মাধ্যমে তিনি ভারতের বুদ্ধিজীবী সমাজে বিশেষ রেখাপাত করেছেন।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়ের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে মর্মাহত। বাংলার মেধাবী সন্তান এবং খ্যাতিমান পণ্ডিত, তিনি আমাদের স্মরণে থাকবেন। তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা।’
বিবেক দেবরায়, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। দেবরায়ের জন্ম শিলংয়ের এক বাঙালি পরিবারে। স্বাধীনতার সময় তাঁর পিতামহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেট থেকে শিলংয়ে এসেছিলেন। কলকাতায় পড়াশোনার পালা শেষ করে দিল্লি ‘স্কুল অফ ইকনমিক্স’-এ পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। এরপরে গন্তব্য ছিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ।
তিনি দেশের প্রথম সারির অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম। ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত নীতি আয়োগের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। এর আগে পুণের গোখলে ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্স এবং ইকনমিক্সের চ্যান্সেলার পদেও কাজ করেছেন তিনি। ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রধান পদেও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘উন্নত ভারত’ গড়ার লক্ষ্যে যে অমৃতকালের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কমিটি গড়েছেন, সেই কমিটিতেও ছিলেন দেবরায়। অর্থনীতিবিদ হওয়ার পাশাপাশি আরও একটি পরিচয় রয়েছে তাঁর। তিনি একজন বিশিষ্ট অনুবাদক এবং শাস্ত্রজ্ঞ। বহু পরিচিত গ্রন্থের লেখক। ২০১৬ সালে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে ভারত সরকার।