নয়াদিল্লি, ৩০ অক্টোবর: বর্তমান সময়ে প্রতারকেরা ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’র কথা বলে ফোন করে টাকা হাতানোর ছক বার করেছে। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে গত রবিবারই তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পরেই এই ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ল অমিত শাহের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব থাকবেন এই কমিটির শীর্ষে। সূত্রের খবর, এই ব্যাপারে প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার। কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৭ লাখ ৪০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। ২০২৩ সালেও সেই সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৫ লাখের বেশি। ২০২২ সালে অভিযোগ জমা পড়ে সাড়ে ৯ লাখ। ২০২১ সালে তা ছিল সাড়ে ৪ লাখের কাছাকাছি। গত তিন বছরের পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যায়, সাইবার সংক্রান্ত অপরাধের উদ্বেগ ঠিক কতটা গুরুতর।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, নারকোটিক্স শাখা, আরবিআই, ট্রাই, শুল্ক বা আয়কর আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফোন করেন প্রতারকেরা। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর কোনও অভিযোগের কথা বলা হয়। কখনও আবার তার সন্তানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এক বার সেই ফাঁদে পা দিলেই ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয় ব্যক্তিকে। ফোন করার সময় যে তদন্ত সংস্থার নাম নিয়ে ফোন করা হয়েছে, সেই সংস্থার ইউনিফর্ম পরে থাকেন প্রতারকেরা। সংস্থার দফতরের আদলে ঘরও সাজানো হয়। তাই ভিডিয়ো কলে সেসব দেখে যথেষ্ট বিশ্বাস করে ফেলেন ‘টার্গেট’ হওয়া ব্যক্তি। এর পরে ‘মামলা’ থেকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে মোটা টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কঠিন শাস্তি পেতে হবে বলেও ভয় দেখানো হয়। এ ভাবেই সাধারণ মানুষদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। এই ফাঁদে পা দিয়ে ইতিমধ্যে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন। সাবধান করে বলেছেন, ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ বলে কিছু হয় না। দেশের কোনও আইনে এই ধরনের গ্রেফতারির কথা বলা নেই।