তেল আবিব: গাজা, সিরিয়া, লেবানন, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, জেরুসালেম নিয়ে এক বৃহত্তর ইসরাইল রাষ্ট্র গড়তে চায় যায়নবাদীরা। সে লক্ষ্যেই তারা গাজা ও লেবাননে সমানে হামলা চালাচ্ছে। এবার তাদের টার্গেট পশ্চিম তীরের পুরো অংশ। এখানে ফিলিস্তিনি অথরিটি নামকা ওয়াস্তে সরকার চালালেও সুপ্রিম পাওয়ার ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাতে। সেই এলাকাটি দখল করে তাদের ভূখণ্ড আরও বাড়াতে চায় নেতানিয়াহু বাহিনী। আগামী বছরের মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায় ইসরাইল। এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন ইসরাইলের কট্টরপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। এক বিবৃতিতে বেজালেল জানান, তার আশা প্রকাশ করছেন ওয়াশিংটনের নতুন প্রশাসন ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরের ‘সার্বভৌমত্বের’ স্বীকৃতি দেবে।
অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়াও বেজালেল স্মোট্রিচ ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলাচ্ছেন। এছাড়া তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং এর বসতিগুলোর প্রশাসনের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে বেজালেল বলেন, ‘২০২৫ সাল হবে জুডিয়া এবং সামরিয়ায় (জুডিয়া এবং সামরিয়া বলতে ইসরাইল সমগ্র পশ্চিম তীরকে বোঝায়) সার্বভৌমত্বের বছর।’
এদিকে কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন উগ্রপন্থি ইহুদি নেতা বেজালেল স্মোট্রিচ। সোমবার ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে এক বৈঠকে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সেটেলমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে পশ্চিম তীরকে ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্তির ভিত্তি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জুডিয়া এবং সামারিয়ায় ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছি। ইসরাইলের এই পদক্ষেপে ট্রাম্পের সমর্থনের আশা করে উগ্রপন্থি এ নেতা বলেন, ‘কোনও সন্দেহ নেই যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যিনি তার প্রথম মেয়াদে তার সিদ্ধান্তে সাহস ও দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, তিনি এই পদক্ষেপে ইসরাইলি রাষ্ট্রকে সমর্থন করবেন।’ ইসরাইলের ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে পশ্চিম তীরকে সংযুক্তি এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতার বিষয়ে চুক্তি রয়েছে বলে স্মরণ করিয়ে দেন বেজালেল। তিনি বলেন, ‘বিপদ দূর করার একমাত্র উপায় হলো জুডিয়া এবং সামারিয়ার বসতিগুলোর ওপর ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করা।’
ইসরাইলের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিন। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেনেহ বলেন, স্মোট্রিচের বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে ১৯৪৮ সালে গড়ে ওঠে ইসরাইল রাষ্ট্র। এরপর গত সাত দশকে ফিলিস্তিনের ৯৫ শতাংশ এলাকা দখল করেছে জায়নবাদী রাষ্ট্রটি। বর্তমানে ফিলিস্তিন বলতে এক চিলতে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরকে বুঝায়। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত সেপ্টেম্বরে লেবাননে শুরু করেছে সামরিক আগ্রাসন।