লন্ডন, ৬ জুলাই: ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টার্মার। এরই মধ্যেই তিনি দেশটির নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। শুক্রবার বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে স্টার্মারকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন। সাধারণ নির্বাচনে ৪১২টি আসনে জয়ী হয়েছে লেবার পার্টি। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন। সংসদের মোট ৬৫০টি আসনের মধ্যে সরকার গঠনের জন্য কোনও দলকে এককভাবে পেতে হয় ৩২৬টি আসন। সে হিসেবে বিরাট জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেওয়া প্রথম ভাষণে স্টার্মার বলেছেন, ‘জনগণ সুচিন্তিতভাবে পরিবর্তন এবং জনগণের সেবামূলক রাজনীতির জন্য ভোট দিয়েছে। তবে দেশকে পরিবর্তন করা সুইচ টেপার মতো নয়। এর জন্য সময় প্রয়োজন হবে।’ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদে মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেছেন স্টার্মার। প্রধানমন্ত্রী, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীসহ শুক্রবারই ২২ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠনের কথা জানায় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট। দেশটির নতুন উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অ্যাঞ্জেলা রেইনাহকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে দেশটির প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হয়েছেন রাচেল রিভস। তাঁকে দেশটির ‘চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার’ (রাজকোষের চ্যান্সেলর) বা অর্থমন্ত্রী করা হয়েছে। ব্রিটেনের ইতিহাসে ৪৫ বছর বয়সী রিভসই প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হলেন। তিনি ২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডে দায়িত্ব পালন করেছেন। এদিকে, দেশটির নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ইয়েভেত্তে কুপার। অপরদিকে ডেভিড ল্যামিকে বিদেশমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে ওয়েস স্ট্রিটিংকে। শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন স্টার্মার ঘনিষ্ঠ ব্রিজেট ফিলিপসন। জ্বালানিমন্ত্রী করা হয়েছে এড মিলিব্যান্ডকে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় হচ্ছে নয়া বিচারমন্ত্রী শাবানা মাহমুদকে নিয়ে। প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় আইন ও বিচার মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন একজন মুসলিম নারী। শাবানা মাহমুদের জন্ম বার্মিংহামে হলেও তিনি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত।  শাবানা তার শৈশব সউদি আরবে কাটিয়েছেন। তিনি ইংরেজির পাশাপাশি উর্দু ভাষায় সাবলীল। ২০১০ সালে, তিনি প্রথম অ-ব্রিটিশ মুসলিম নারী হিসেবে হাউস অব কমন্সে নির্বাচিত হন। ওই বছর আরও দু’জন নারী (বাংলাদেশি রুশনারা আলী এবং পাকিস্তানি ইয়াসমিন কুরেশি) সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। শাবানা মাহমুদ ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম নারী বিচারমন্ত্রী। এছাড়া, তিনি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী হিসেবে ‘লর্ড চ্যান্সেলর’ পদটি গ্রহণ করেছেন। জানা যায়, ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছেন জোনাথন রেনল্ড এবং শ্রম ও কারামন্ত্রী হয়েছেন লিজ কেন্ডাল। এছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে জন হিলিকে।