অস্ত্রোপচার শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন অভিষেক
হাওড়া ডিভিশনে লাইনচ্যুত ট্রেন
মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা দিল হজযাত্রীদের শেষ উড়ান
পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ রেলের বিরুদ্ধে দায় এড়ানোর প্রশ্ন আগেই উঠেছিল। এবার যে যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দূর্ঘটনায় মালগাড়ি চালক সহ চালকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। অভিযোগকারী সেই যাত্রীর বাবা চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন।
এফআইআর দায়েরের কয়েক ঘন্টার মধ্যে মঙ্গলবার অভিযোগকারীর বাবা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় রেলের কর্মকর্তারা দূর্ঘটনায় আহত তাঁর মেয়েকে দিয়ে জোর করে একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেন।
এনজিপি স্টেশন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে নীচবাড়ি ও রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে মর্মান্তিক রেল দূর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় মৃত মালগাড়ির চালক এবং গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন সহ চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় নিউ জলপাইগুড়ি জিআরপিতে। নথিভুক্ত এই অভিযোগে অভিযোগকারী হিসাবে দূর্ঘটনায় আহত চিকিৎসাধীন যাত্রী চৈতালি মজুমদারের নাম উঠে আসে। যিনি দূর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের এস৬ কোচের ১৭নং(মিডিল বার্থ) সিটের যাত্রী ছিলেন। চৈতালি এনজিপি থেকে শিয়ালদহ আসছিলেন। তাঁর পিএনআর নম্বর ছিল ৬১৩৭২৯৭৯০৪। লিখিত সেই অভিযোগ দাবি করা হয়েছে, মালগাড়ির চালক এবং সহ চালকের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং তাড়াহুড়োর কারণেই দূর্ঘটনাটি ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা অভিযোগকারীর সেই লিখিত বয়ান অনুযায়ী, চৈতালি দূর্ঘটনার পর বগি থেকে নেমেছিলেন এবং বুঝতে পেরেছিলেন মালগাড়িটি পিছন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দিয়েছে। তারপরে তাকে চিকিৎসার জন্য রেলের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
লিখিত সেই অভিযোগের ২৪ ঘন্টা না পেরোতেই চৈতালি দেবীর করা সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন তাঁর বাবা চিন্ময় মজুমদার। মঙ্গলবার চিন্ময়ের দাবি, সেদিনের অভিশপ্ত সেই ট্রেনের যাত্রী ছিল তাঁর কন্যা। সে নিজেই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্রেনের ভিতরে বসে সে কিভাবে জানবে কেমন করে দূর্ঘটনা ঘটেছে এবং কারা তার জন্য দায়ী। আরপিএফ এবং পুলিশ তাকে একটি সাদা কাগজে সই করাতে বাধ্য করেছিল। অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চৈতালীকে কাগজে সই করানো হয়।
প্রসঙ্গত, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার নেপথ্যে প্রথম থেকেই সিগন্যাল-বিভ্রাটের বিষয়টা সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের পর মালগাড়ির চালক সিগন্যাল ফেল করেই রাঙাপানির দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। তাতেই দুর্ঘটনা। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনের দুটো কামরা দুমড়ে মুচড়ে যায়। পার্সেল বগি উঠে যায় ইঞ্জিনের ওপর। ঘটনায় মৃত্যু হয় মালগাড়ির চালক অনীল কুমারের। সোমবারই বগি কেটে বার করা হয় তাঁর দেহ। সহকারি চালকও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তাঁদের বিরুদ্ধেই দায়ের হয় অভিযোগ।
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে সেফটি কমিটি। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন, সেফটি কমিশনারের তদন্ত রিপোর্ট আসার আগেই তড়িঘড়ি এই লিখিত অভিযোগ করে কার্যত কর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা কিনা সে প্রশ্নও উঠছে।