Sat, June 29, 2024

ই-পেপার দেখুন

আসন্ন ঈদ: সম্প্রীতির আহ্বান মুসলিম নেতৃবৃন্দের

News Desk

Published: 17 June, 2024, 03:11 PM

পুবের কলম প্রতিবেদক: সোমবার পালিত হবে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা বা কুরবানির ঈদ। এই সময় যাতে রাজ্যে শান্তি বজায় থাকে এবং হিন্দু-মুসলিম সৌহার্দ্যের মধ্যে ত্যাগের উৎসব ঈদ-উল-আযহা পালিত হতে পারে, তার জন্য পয়গাম দিলেন রাজ্যের মুসলিম নেতৃবৃ¨ ও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীকে বার্তা দিতে মুসলিম উম্মাহর কাছে বার্তা দিতে শনিবার বৈঠকে বসেন রাজ্যের মিল্লি নেতারা। রাজভবনে অবস্থিত সিদ্দিকুল্লাহ সাহেবের ফ্ল্যাটে রাজ্যের গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষা দফতরের মন্ত্রী এবং জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি জনাব মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরির নেতৃত্বে বিভিন্ন সংগঠন ও বিশিষ্টরা বৈঠকে বসেন। তাঁরা সবাই ঈদ উপলক্ষে মুসলিম উম্মাহর করণীয় ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও সাংবাদিকদের সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

বামদিক থেকে সাইফুর রহমান, ফাইসাল ইকবাল, ফরিদ খান, জাকি মাদানি, মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি, আহমদ হাসান ইমরান, সাব্বা ইসমাইল, মোক্তার আলি, সাদাব মাসুম, এহেতাসামূল হক। (ছবি-খালিদুর রহিম)

এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামি হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সেক্রেটারি সাদাব মাসুম, পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান, আহলে হাদিসের জাকি আহমেদ মাদানি, ক্বারী সাইফুর রহমান, মাওলানা সাবা ইসমাইল, মোকতার আলি, ফরিদ খান, এহতেশামুল হক প্রমুখ।

সভার আহ্বায়ক মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি কুরবানি তথা ঈদ-উল-আযহার ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় দিক নিয়ে আলোচনা করেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলায় প্রায় হাজার বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে ঈদ-উল-আযহায় পশু কুরবানির এই হুকুম মুসলমানরা পালন করে আসছেন। ভিন্ন ধর্মের মানুষকে কষ্ট দেওয়া ইসলামে বারণ রয়েছে। কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ও স্বার্থ, সম্পদ এবং আত্মত্যাগের মহিমা তুলে ধরাই হচ্ছে কুরবানির ঈদ।

তিনি আরও বলেন, ™রিস্থিতি সম্পর্কে সবাই সম্যকভাবে অবগত আছেন। ঈদ-উল-আযহার পবিত্র নির্দেশাবলি পালন করার ক্ষেত্রে আমরা যাতে বুঝে ও সতর্ক হয়ে নামায পড়তে ও কুরবানি দিতে পারি সে-বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। রাস্তার মাঝখানে কুরবানি দিলে বা যত্রতত্র রক্ত-হাড় ইত্যাদি পড়ে থাকলে তা অন্যের কষ্টের কারণ হতে পারে। সেটা মাথায় রেখে ঘেরাটোপের মধ্যে পশু জবেহ করা উত্তম। আমাদের এই ত্যাগের মহোৎসবে কারও অনুভূতিতে যাতে আঘাত না লাগে, কারও নিকট যাতে ভুল বার্তা না যায়, কোনোরূপ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি যাতে না সৃষ্টি হয় সে-বিষয়েও মুসলিম নাগরিকদের সচেতন থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম-এর সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলিম সকলে মিলে এখানে মিলেমিশে সম্প্রীতির মধ্যে থাকি। তবে কিছু এলিমেন্ট রয়েছে, যারা শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় থাকুক এটা চায় না। সেটা অবশ্য তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যেভাবেই হোক যেন শান্তি বজায় থাকে। সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে সবাইকে বলব, পুলিশ-প্রশাসন সতর্ক রয়েছে, আমাদেরও সজাগ থাকতে হবে।

হিন্দু-মুসলিম, শিখ-খ্রিস্টান সবাই মিলে এক হয়ে রাজ্যের মধ্যে যে শান্তির পরিবেশ আছে তা সব সময় বজায় থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। মনে রাখতে হবে ঈদ-উল-আযহা ত্যাগের উৎসব, তাই ত্যাগের মাধ্যমে হলেও শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।

অন্যদিকে, জামাআতে ইসলামি হিন্দের প্রতিনিধি সাদাব মাসুম বলেন, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কুরবানি ও ঈদের গুরুত্ব অনেক। শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব পালনে বাধা সৃষ্টি করতে কিছু মানুষ বিভাজনের চেষ্টা করতে পারে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। একই কথা বলেন মাওলানা জাকি আহমেদ মাদানি। তিনি বলেন, আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার ইবাদত কুরবানি, তাই আমাদের এ বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। ইসলামের সঙ্গে কুরবানি ও দুই ঈদের গুরুত্ব নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করেন মাওলানা সাবা ইসমাইল।

হাজী ফাউন্ডেশনের মুক্তার আলি বলেন, ঈদ ও পুজোর সময় প্রশাসনের তরফে প্রতি থানায় শান্তি-বৈঠক করা হয়। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে তবুও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ রাজ্যের সকল নাগরিককে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।

  

Leave a comment