ওয়াশিংটন, ১৭ জানুয়ারি: চারিদিকে সাজো সাজো রব। নতুন রং, ঝাড়পোঁছ, প্রহরীদের ব্যস্ততা, চলছে প্যারেড পরিকল্পনা। অতিথিদের কী খাওয়ানো হবে তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে। সেজে উঠছে ক্যাপিটল হিল। কিন্তু তাতে ‘বিশ্বগুরু’ ট্রাম্পের দোস্ত মোদিই থাকবেন না! গুজব মনে হলেও এটাই যেন সত্যি হতে চলেছে। হাউডি মোদি, নমস্তে ট্রাম্পের দৌলতে সবাই জানত দুজনের সখ্যের কথা। কিন্তু সেই ট্রাম্প দ্বিতীয়বার মার্কিন মসনদ ফিরে পেয়ে মোদিকে শপথ অনুষ্ঠানেই ডাকলেন না?
এর আগের বার ‘হাউডি মোদি’র অনুষ্ঠানের পর ট্রাম্প হেরেছিলেন বলেই কি এমন! শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েই বোধহয় ট্রাম্পের বিরাগভাজন হয়েছেন মোদি। কিন্তু ট্রাম্প কি হাসিনাকে পছন্দ করেন না? সেটাও লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে এখন মার্কিন নীতি বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের পক্ষেই। ট্রাম্প হঠাৎ করে তার বিরোধিতা করবেন না।
আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন আন্তর্জাতিক নেতাদের অনেকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকায় ইউরোপের মধ্যমপন্থীদের বাদ দিয়ে অনেক কট্টর ডানপন্থী ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানাতে দেখা গেছে। তবে শপথ অনুষ্ঠানে চিনের প্রেসিডেন্ট সি জিন পিং আমন্ত্রণ পেলেও নরেন্দ্র মোদির নাম নেই আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায়।
ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় ওপরের সারিতে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেইর নাম রয়েছে। এর মধ্যে মিলেই এক মাস আগেই নিশ্চিত করেছেন, তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে মেলোনি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের মার-এ-লাগো রিসোর্টে যান। ট্রাম্প তাকে তখন এক ‘দুর্দান্ত নারী’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। শপথ অনুষ্ঠানেও তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মেলোনির কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসাকারী হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবানও আমন্ত্রণ পেয়েছেন। এদিকে, কেন্দ্রের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তবে ট্রাম্পকে ‘বন্ধু’ সম্বোধনকারী নরেন্দ্র মোদি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি। আজ শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বিষয়টি এড়িয়ে যান। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেশি ইওয়াও নিশ্চিত করেছেন, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার। অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে ব্রাজিলে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলার কারণে পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারছেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ও শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের পাশাপাশি শপথ অনুষ্ঠানে আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এবং মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গের মতো প্রযুক্তি খাতের স্বনামধন্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকছেন।