পুবের কলম প্রতিবেদক: কোটা আন্দোলনের আগুন ছড়িয়েছে গোটা বাংলাদেশে । দেশজুড়ে চলছে কার্ফ ঘোযনা করেছে হাসিনা সরকার। সমগ্র বাংলাদেশের রাস্তায় নেমেছে সেনা। পড়শি দেশের এই অবস্থায় চিন্তা ছড়িয়েছে এপার বাংলার বুকেও। আর তাই চিন্তিত এ রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও। কেননা বাংলাদেশে আটকে আছেন এ রাজ্যের বহু বাসিন্দা ও পড়ুয়া।
আর তাই সময় নষ্ট না করে শনিবার রাজ্য সরকার এই বিষয় নিয়েই যোগাযোগ করল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে। এদিন নবান্নের তরফে দিল্লিতে থাকা পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্সিয়াল কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ও এ রাজ্যের কেউ এখন বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন কিনা, থাকলে তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন, সেসব বিস্তারিত খবরাখবর নিতে।
শ্রীপৎ সিং কলেজের ৭৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় পোস্টের বিশেষ কভার উন্মোচন
মানবিক মুখ্যমন্ত্রী, নিয়ম মেনেই হর্কাসদের জন্য আলাদা অঞ্চল করে দেওয়ার পরিকল্পনা
রেলওয়ের জায়গায় অন্য রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিস ভাঙা পড়লেও, বিজেপি পার্টি অফিস বহাল তবিয়তে
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে এ বিষয়ে যাবতীয় সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলার রেসিডেন্সিয়াল কমিশনারকে। জানানো হয়েছে, নবান্ন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সতর্ক। যে কোনও প্রয়োজনে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। যদিও উত্তপ্ত বাংলাদেশ থেকে ইতিমধ্যেই দেশে ফিরছেন আতঙ্কিত পড়ুয়ারা। দুই বাংলার বিভিন্ন সীমান্ত পেরিয়ে চলে এসেছেন অনেকে।
শুধু বাংলার পড়ুয়ারা নন, নেপাল, ভুটান-সহ প্রতিবেশী যেসব দেশ থেকে বাংলাদেশে কোনও না কোনও কারণে গিয়েছিলেন তাঁরা, সকলেই ফিরতে মরিয়া। শনিবার থেকে বাংলাদেশ জুড়ে জারি হয়েছে কাফু। আর তাই যারা আটলে আছেন সে দেশে তাঁরা এবার ফেরা নিয়ে আরও সমস্যায় পড়বেন।
এই সংকট থেকে উদ্ধার পেতে কূটনৈতিক স্তরে তৎপরতা বাড়াচ্ছে নবান্ন। বাংলাদেশে অশান্তির প্রভাব পড়েছে পেট্রাপোল বন্দরেও। শনিবার সকালের পর বাংলাদেশে রফতানি বন্ধ করা হয়েছে। আমদানিও চলছে ধীর গতিতে। সে দেশ থেকে ভারতে আসা যাত্রীর সংখ্যাও কমেছে।
এর প্রভাব পড়েছে মুদ্রা বিনিময়ে। যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য পেট্রাপোলে থাকে যানবাহন। যাত্রী না আসায় তাদের ব্যবসাও ধাক্কা খেয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে বাংলাদেশে জারি করা হয়েছে কার্ফ। রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এই আবহে শনিবার সকালে সে দেশে পেট্রাপোলের মাধ্যমে ৩৫ ট্রাক পণ্য রফতানি করা হয়েছে।
তার পরেই বন্ধ করা হয়েছে রফতানি। দুই বাংলার মধ্যে ট্রেন ও বাস যোগাযোগ বন্ধ আছে। তবে চালু আছে বিমান যোগাযোগ। অর্থাৎ ৭ কলকাতা থেকে চালু আছে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামের বিমান। কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশজুড়ে কার্কু চলছে বিমানে যাত্রীও হচ্ছে না। কেননা যারা এদেশ থেকে সেখানে যেতেন তাঁরা সব যাত্রা বাতিল করছেন আর যারা সেখানে আটকে আছেন তাঁরা যেখানে আছেন, সে হোটেল হোক কী বাড়ি সেখানে থেকে বেড়িয়ে বিমানবন্দরে আসতে পারছেন না।
আর সেখানেই ঘনাচ্ছে উদ্বেগ। এপার বাংলার যারা আটকে আছেন ওপার বাংলায় তাঁরা ফিরতে চাইলেও ফিরতে পারছেন না। যেহেতু বাংলাদেশজুড়ে বন্ধ আছে ইন্টারনেট ও ফোন সংযোগ তাই এপারে থাকা বহু পরিবারই যোগঅ্যাোগ করতে পারছেন না ওপারে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। কে কী অবস্থায় আছেন তাও তাঁরা জানেন না।
তবে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে অশান্তির ঘটনায় কোনও ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। কেউ আহত হয়েছেন বলেও জানা যায়নি। এরাজ্যের মালদা ,মূর্শিদাবাদ, বীরভুমসহ বেশ কয়েকটি জেলার বহু ছাত্রও পড়াশুনা করে বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজ গুলিতে। তাদের পবিবারের মাঝে উদ্বেগও বেড়েছে। তাদের ব্যাপারে খোজ চালাচ্ছে নবান্ন।