পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান , বৌদ্ধ সব ধর্ম সমন্বয়েই বাংলাদেশ। এই দেশ সবার। অন্য ধর্মকে ছোট করে নিজের ধর্মের গৌরব বৃদ্ধি কখনোই সম্ভব নয়। আর তা করলে নিজের ধর্মেরই অবমাননা হয়। তাই নিজের এবং অন্য, সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও নমনীয় হতে হবে। একে অন্যের ধর্মের কথা শুনতে হবে এবং তা থেকে শিখতে হবে।
সোমবার একটি সভায় এমনটাই মন্তব্য করলেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি এদিন আরও বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চাই। একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চায়। হিন্দু-মুসলিম, ইত্যাদি সকল ধর্মকে নিয়েই তা সম্ভব। ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আল্লাহ যদি দুনিয়াতে বহু জাতির মানুষদের লালন-পালন করতে পারেন। তাহলে মানুষকে ঘৃণা করার আমি কে? দেশের একজন নাগরিক হিসেবে সবার সমান অধিকার থাকতে হবে।
সে রকম একটা সম্প্রীতির বাংলাদেশ আমরা চাই। একটা দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই। দুয়া করবেন সেই বাংলাদেশ যেন আমরা গড়তে পারি। যার জন্য প্রয়োজন একতা আর সকলের দুয়া। দেশের পিরোজপুর জেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পিরোজপুর জেলা আমাদের একটা আবেগের জেলা। এটা একটি সৌভাগ্যবান জেলা। এই জেলায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্ম। হাসিনা সরকারের সময় তাঁর সঙ্গে ঘটা কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনাও তুলে ধরেন তিনি।
বলেন, দেশে থাকলেও আগে আমাকে ভয়ে ভয়ে, সাবধানতার সঙ্গে থাকতে হতো। দেশ থেকে বিদেশে সফর করতে যাওয়ার সময় বহু বার আমাকে আটকে রাখা হয়েছে। আমার পাসপোর্ট দুই বছর আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। অনেক যুদ্ধ ও লড়াই করে পাসপোর্ট আনতে হয়েছে। আমি কি চোর, ডাকাত নাকি খুনি ছিলাম? কেন একজন নাগরিক হিসেবে আমার পাসপোর্ট আমি পাইনি।’ জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আমাদের ওপর একটি পাথর চাপা পড়ে ছিল।
আল্লাহ ১৮ কোটি মানুষের চোখের পানি কবুল করেছেন। বিনিময়ে আল্লাহ আমাদের একটি মুক্তির স্বাদ দিয়েছেন। মুক্তি এমনি এমনি আসে নাই। সাড়ে ১৫ বছরে হাজারো মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। দফায় দফায় বহু মানুষকে জেলে পাঠানো হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে দল-মত-নির্বিশেষে বহু মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। এসব জীবনের বিনিময়ে আমাদের এই স্বস্তিটুকু এসেছে।’
তাই আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন-যাপন করা। আর ঐক্যবদ্ধ ভাবে থাকতে গেলে সকলকে নিয়ে চলতে হবে। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ইসলাম পছন্দ করে না। মারামারি-কাটাকাটি নয় শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ আমাদের কাম্য।