০২ নভেম্বর ২০২৫, রবিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বেড়ে ২২৬, বিজেপি কমে ৬৬

ইমামা খাতুন
  • আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার
  • / 212

পুবের কলম প্রতিবেদক:  গত বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা এ রাজ্যের বিজেপি নেতাদের ২০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু ফলাফল কী হয়েছিল, সেটা বাংলার জনতা দেখতে পেয়েছে। বিজেপিকে শেষ পর্যন্ত তাদের থামতে হয়েছিল ৭৭-এ।

গত চার বছরে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা বাড়েনি, বরং কমেছে। শুধু দলবদল নয়, নিজেদের হাতে থাকা একের পর এক বিধানসভাও পর পর উপনির্বাচনে হাতছাড়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। শনিবারের উপনির্বাচনের ফলাফলের পর এই তালিকায় নবতম সংযোজন আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট।

বিজেপির দখলে থাকা বাগদা, রায়গঞ্জ এবং ধূপগুড়ি আসনগুলিও এর আগে উপনির্বাচনে তৃণমূলের কাছে হেরেছে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর পরই কোচবিহার এবং শান্তিপুরের উপনির্বাচনেও হারে বিজেপি। সবমিলিয়ে গত তিন বছরে নিজেদের দখলে থাকা সাতটি আসন হাতছাড়া হয়েছে পদ্ম শিবিরের। ফলে সরকারিভাবে রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির আসন সংখ্যা ৭৭ থেকে কমে ৭০ হয়েছে।

তবে কাগজে কলমে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭০ হলেও বাস্তবে বিধানসভায় বিধায়ক সংখ্যা আরও কম। কারণ ২০২১-এর পর আরও চার বিজেপি বিধায়ক দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে সরকারিভাবে ৭০ হলেও আসলে বিধানসভায় বিজেপির হাতে ৬৬ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনের পর ক্রমশই তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিটি উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। শনিবারের আগে পর্যন্ত সরকারিভাবে বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ছিল ২১৫। শনিবার ৬টি আসনে জয় পাওয়ার পর তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়াল ২২১। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও পাঁচ দলবদলু বিধায়কের সমর্থন। যাঁরা অন্যান্য দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে তাঁদের ধরলে বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২২৬।

যে পাঁচ দলবদলু বিধায়ক তৃণমূলে এসেছেন—

কৃষ্ণনগর উত্তর- মুকুল রায় (বিজেপি)

কোতুলপুর- হরকালি প্রতিহার (বিজেপি)

আলিপুরদুয়ার- সুমন কাঞ্জিলাল (বিজেপি)

বিষ্ণুপুর- তন্ময় ঘোষ (বিজেপি)

সাগরদিঘি- বায়রন বিশ্বাস (কংগ্রেস)

উল্লেখযোগ্য বিষয় রাজ্য বিধানসভায় বামেদের কোনও বিধায়ক নেই। এই মুহূর্তে বিজেপি বাদে বিরোধী শিবিরের বিধায়ক বলতে রাজ্য বিধানসভায় রয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। এ ছাড়াও রয়েছেন নির্দল বিধায়ক রুদেন সদা লেপচা। কংগ্রেসের বায়রন বিশ্বাস ছিলেন। তিনি তৃণমূলে চলে আসায় কংগ্রেস শূন্য হয় বিধানসভা।

দেখে নেওয়া যাক ২৯৪ আসনবিশিষ্ট রাজ্য বিধানসভায় শনিবারের পর কোন দলের বিধায়ক সংখ্যা কত? (দল বদলকারীদের ধরে)

তৃণমূল- ২২৬

বিজেপি- ৬৬

আইএসএফ-১

নির্দল-১

গত তিন বছরে রাজ্য বিধানসভায় শাসক বিরোধী সবার সংখ্যাই বেড়েছে অথবা কমেছে। শূন্য থেকে ১ হয়েছে কংগ্রেসও। যদিও সাগরদিঘি থেকে ভোটে জেতা সেই বায়রন বিশ্বাসও দল বদলে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। শুধু শূন্যেই আটকে রয়েছে বামেরা। আর জি কর আন্দোলনে মরিয়া হয়ে পথে নামলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের ময়দানে বামেদের দুর্দশা কিছুতেই কাটছে না। বাম নেতৃত্ব তাদের কর্মীদের দিশা দেখাতে ব্যর্থ।

Tag :

প্রতিবেদক

ইমামা খাতুন

২০২২ সাল থেকে সংবাদ জগতের সঙ্গে যুক্ত। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতাতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে রিপোর্টার হিসেবে হাতেখড়ি। ২০২২ সালের শেষান্তে পুবের কলম-এর সঙ্গে যুক্ত হয়। ইমামার ভাষ্যে, The First Law of Journalism: to confirm existing prejudice, rather than contradict it.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বেড়ে ২২৬, বিজেপি কমে ৬৬

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার

পুবের কলম প্রতিবেদক:  গত বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা এ রাজ্যের বিজেপি নেতাদের ২০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু ফলাফল কী হয়েছিল, সেটা বাংলার জনতা দেখতে পেয়েছে। বিজেপিকে শেষ পর্যন্ত তাদের থামতে হয়েছিল ৭৭-এ।

গত চার বছরে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা বাড়েনি, বরং কমেছে। শুধু দলবদল নয়, নিজেদের হাতে থাকা একের পর এক বিধানসভাও পর পর উপনির্বাচনে হাতছাড়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। শনিবারের উপনির্বাচনের ফলাফলের পর এই তালিকায় নবতম সংযোজন আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট।

বিজেপির দখলে থাকা বাগদা, রায়গঞ্জ এবং ধূপগুড়ি আসনগুলিও এর আগে উপনির্বাচনে তৃণমূলের কাছে হেরেছে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর পরই কোচবিহার এবং শান্তিপুরের উপনির্বাচনেও হারে বিজেপি। সবমিলিয়ে গত তিন বছরে নিজেদের দখলে থাকা সাতটি আসন হাতছাড়া হয়েছে পদ্ম শিবিরের। ফলে সরকারিভাবে রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির আসন সংখ্যা ৭৭ থেকে কমে ৭০ হয়েছে।

তবে কাগজে কলমে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭০ হলেও বাস্তবে বিধানসভায় বিধায়ক সংখ্যা আরও কম। কারণ ২০২১-এর পর আরও চার বিজেপি বিধায়ক দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে সরকারিভাবে ৭০ হলেও আসলে বিধানসভায় বিজেপির হাতে ৬৬ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।

গত বিধানসভা নির্বাচনের পর ক্রমশই তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিটি উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। শনিবারের আগে পর্যন্ত সরকারিভাবে বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ছিল ২১৫। শনিবার ৬টি আসনে জয় পাওয়ার পর তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়াল ২২১। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও পাঁচ দলবদলু বিধায়কের সমর্থন। যাঁরা অন্যান্য দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ফলে তাঁদের ধরলে বিধানসভায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২২৬।

যে পাঁচ দলবদলু বিধায়ক তৃণমূলে এসেছেন—

কৃষ্ণনগর উত্তর- মুকুল রায় (বিজেপি)

কোতুলপুর- হরকালি প্রতিহার (বিজেপি)

আলিপুরদুয়ার- সুমন কাঞ্জিলাল (বিজেপি)

বিষ্ণুপুর- তন্ময় ঘোষ (বিজেপি)

সাগরদিঘি- বায়রন বিশ্বাস (কংগ্রেস)

উল্লেখযোগ্য বিষয় রাজ্য বিধানসভায় বামেদের কোনও বিধায়ক নেই। এই মুহূর্তে বিজেপি বাদে বিরোধী শিবিরের বিধায়ক বলতে রাজ্য বিধানসভায় রয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। এ ছাড়াও রয়েছেন নির্দল বিধায়ক রুদেন সদা লেপচা। কংগ্রেসের বায়রন বিশ্বাস ছিলেন। তিনি তৃণমূলে চলে আসায় কংগ্রেস শূন্য হয় বিধানসভা।

দেখে নেওয়া যাক ২৯৪ আসনবিশিষ্ট রাজ্য বিধানসভায় শনিবারের পর কোন দলের বিধায়ক সংখ্যা কত? (দল বদলকারীদের ধরে)

তৃণমূল- ২২৬

বিজেপি- ৬৬

আইএসএফ-১

নির্দল-১

গত তিন বছরে রাজ্য বিধানসভায় শাসক বিরোধী সবার সংখ্যাই বেড়েছে অথবা কমেছে। শূন্য থেকে ১ হয়েছে কংগ্রেসও। যদিও সাগরদিঘি থেকে ভোটে জেতা সেই বায়রন বিশ্বাসও দল বদলে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। শুধু শূন্যেই আটকে রয়েছে বামেরা। আর জি কর আন্দোলনে মরিয়া হয়ে পথে নামলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের ময়দানে বামেদের দুর্দশা কিছুতেই কাটছে না। বাম নেতৃত্ব তাদের কর্মীদের দিশা দেখাতে ব্যর্থ।