পুবের কলম প্রতিবেদকঃ ছানা ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে প্রাণ দিতে হয় বেলডাঙ্গার বেগুন বাড়ির এক নাজিমুদ্দিনের। তরতাজা এই যুবকের মুত্যুর পর হুঁশ ফিরল রেলের। সোমবার থেকে সাধারণ বগিতে ছানা নিয়ে উঠতে পারবে না ছানা ব্যবসায়ীরা। এতদিন শিয়ালদহ-লালগোলা ট্রেনের দরজা থেকে আসনের নিচে সব জায়গাতেই ছানার ঝুড়ি। জলে ভাসছে কামরা। ছানার কড়া গন্ধে যাত্রীদের অবস্থা সঙ্গীন। এই যন্ত্রণা ভোগ করতে করতেই প্রতিদিন যাওয়া-আসা করতে হচ্ছিল শিয়ালদহ-লালগোলা– কৃষ্ণনগর– শান্তিপুর শাখার নিত্যযাত্রীদের। প্রতিবাদ করলেই অকথ্য গালি গালাজ করত ব্যবসায়ীরা। হাতাহাতি পর্যন্ত হত নিত্যযাত্রীদের। দীর্ঘ ভোগান্তি নিয়ে বারবার অভিযোগ আসছিল রেল ও পুলিশের কাছে। সোমবার এই ভোগান্তি থেকে অবসান পেলেন যাত্রীরা। ছানা আর যাত্রীবাহী কামরায় তুলতে পারবেন না ব্যবসায়ীরা। শুধুমাত্র ভেন্ডারেই যাতায়াত করতে হবে ছানা নিয়ে।
ছানা ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে শনিবার রেলপুলিস ও ছানা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠক হয়। কৃষ্ণনগরে এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে– ছানা ট্রেনের ভেন্ডার কামরা ছাড়া অন্য যাত্রীবাহী কামরায় তোলা হবে না। পাশাপাশি ভান্ডার কামরার দরজাও বন্ধ করতে পারবেন না তারা। রেল পুলিশের ডিএসপি (গেদে) নরেন্দ্রনাথ দত্ত বলেন– ছানা ব্যবসায়ীরা যাত্রীবাহী কামরায় ছানা তোলায় স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারেন না নিত্যযাত্রীরা। ছানার জলে কামরা ভিজে থাকা থেকে শুরু করে– সিটের নিচে– পা-দানিতে ছানার ঝুড়ি রাখা নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে রোজই ঝামেলা বাধে ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি ছানা তুলে ভেন্ডার কামরার দরজা বন্ধ করে দেওয়ায় মাঝ পথ থেকে কেউ সে কামরায় চড়তে পারেন না। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আসছিল।
রেল পুলিশের ডাকে বৈঠকে বসেন নদিয়া মুর্শিদাবাদ ছানা ব্যবসায়ী সমিতি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে– সাধারণ যাত্রী কামরায় ছানা তুলবেন না ব্যবসায়ীরা। ভেন্ডার কামরার দরজাও বন্ধ করবেন না তারা। লালগোলা-শিয়ালদহ শাখার লোকাল ট্রেনে এই দৌরাত্ম্য এ দিশাহারা যাত্রীরা। এই দুর্ভোগ কাটাতে রেলের বৈঠকে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত না মানলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।