বিপাশা চক্রবর্তী, কলকাতাঃ ইতিউতি চোখের চাহনি। কারুরু পাংশুটে মুখ। চোখের তলায় কালি। সোয়েটার সাইজের তুলনায় যেন একটু বেশিই বড়। প্রায় পা পর্যন্ত নেমে এসেছে। হ্যাঁ, সেই পার্ক স্ট্রিটেই দাঁড়িয়ে আছে ওরা। নামি দামি রেস্তোরাঁ থেকে যারা খেয়ে দেয়ে বের হচ্ছে তাদের কাছে ছুটে যাচ্ছে। যদি একটা কেউ বেলুন কেনে। তার পর হিসেব করে দেখে নেওয়ার পালা। আজকে ইনকাম হল ঠিক কতটা। এটা প্রতিদিনের কাজ। তবে বড়দিন মানেই প্রচুর ভিড়। তাই বাড়তি লাভ।
বাবা-মায়ের কাছে যখন কেউ সান্টাক্লজ কেনার বায়না করছে। বাবা ছেলের মন জোগাতে কিনে দিচ্ছে সেই খেলনা। না ওদের আবদার মেটানোর কেউ নেই। আর থাকলেও আবদার মেটানো সম্ভব নয়।
একপাশে ছোট্ট ছেলেটা বাবা-মায়ের সঙ্গে যখন রেস্তরাঁ থেকে বড়দিন উপভোগ করতে ব্যস্ত। ঠিক তখনই পাশে কেউ এসে কোট ধরে টেনে বলছে ‘একটা সান্তাক্লজ’ টুপির দাম ২০ টাকা। নাও না দিদি’।
৮ থেকে ১০ এই বয়সেই সংসারের দায়িত্ব উঠে এসেছে কাঁধে। চোখে মুখে স্পষ্ট খিদে, সংসারের দায়িত্ব। তাও তার মধ্যেই একটা রঙিন বেলুন, থেকে সান্টা টুপি বিক্রি হলে মুখে একগাল হাসি।
এর নাম পার্ক স্ট্রিট। এ এক আলাদা কলকাতা। এখানে চারদিকে শুধু আনন্দ। সেই আনন্দের মাঝে কখন, সখনও বেজে ওঠে বিষাদের সুর। পার্ক স্ট্রিট আছে, পার্ক স্ট্রিটেই।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের কবিতার একটি লাইন ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।