পুবের কলম, ওয়েব ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনে মুখথুবড়ে পড়ার পর উপনির্বাচনে বোল্ড আউট রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। মাদারিহাটের জেতা আসনও হয়েছে হাতছাড়া। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের ফাইনাল ম্যাচের পূর্বে সেমিফাইনালে ছক্কা মেরে আত্মবিশ্বাসী রাজ্যের শাসক দল। অন্যদিকে বারবার হারের ধাক্কায় বেসামাল পদ্ম শিবির। সামনে চলে আসছে আপত শৃঙ্খলার আড়ালে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কতটা দীর্ণ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। রাজ্য বিজেপির আপাত কোণঠাসা শিবির মুখ খুলছে বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পূর্বেই প্রশ্ন উঠেছিল। এবার তা নিয়ে সরব হচ্ছে শুভেন্দু শিবির। এই ফাঁকে রিজার্ভবেঞ্চ থেকে সরব হচ্ছে দিলীপ ঘোষ, তথাগত রায়দের মতো বর্ষীয়ানরাও। বাস্তবে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে একই দলে বহু শিবিরের ঠোকাঠুকি।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই আগুনে অর্জুন সিংয়ের পর ঘি ঢাললেন রুন্দ্রনীল ঘোষ। সম্প্রতি এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষ্যাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘সাংগঠনিক ক্ষেত্রে আমার নিজের ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় এলাকা ভিত্তিক নেতা তৈরি করতে হবে। তাঁর কাছে ক্ষমতা দিতে হবে। বিশেষ করে যুব সমাজ থেকে নেতা তৈরি করা প্রয়োজন। আমাদের মতো প্রচুর লোকজন আছেন যাঁরা ছুটতে চান। কাজ করতে চান। তবে তাঁদের ছোটবার ক্ষেত্রে পরিষ্কার সেই নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন। না হলে বাড়ি বসে কথা বলতে হবে। নয়ত, দশটা মানুষ ভুল বুঝে বলবেন আপনাকে তো রাজ্যের দশটা জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় না।’ শুধু তাই রাজ্যের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সম্পর্কে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকজন বিজেপির সংগঠনের নেতা কী মনে করছেন, সেটা দিল্লিকে না বুঝিয়ে বুথ স্তরের কর্মীরা যে অত্যাচারের সম্মুখীন হচ্ছেন। জনগণ যেভাবে বিজেপিকে দেখতে চাইছে সেই বার্তাটা যেন দিল্লিতে পৌঁছয়। ক্ষমতাকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করা গেরুয়া শিবির শতধা বিভক্ত এই নড়বড়ে সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়া কী সত্যিই সম্ভব- তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ জোড়াফুল শিবিরে মতবিরোধী যায় থাকুক দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য নিয়ে কোনও প্রশ্নই নেই। পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দলের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের প্রভাবে আমজনতার অকুন্ঠ সমর্থন। তাকে কাউন্টার করা কী সত্যিই সম্ভব? প্রতিটি নির্বাচনেই বিপুল ভোটে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে যাচ্ছে বিজেপি-সহ বিরোধী শিবির।
আর জি কর আন্দোলন ঘিরে টানা তিনবারের শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধীতার ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাওয়া বিরোধী শিবির বুঝে গেছে সে গুড়ে বালি। শুধু তাই নয় মহানগরীর এই আন্দোলন বৃহত্তর পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম বাংলায় প্রভাবশূণ্য তাও এক প্রকার স্পষ্ট উপনির্বাচনের অ্যাসিড টেস্টে।