পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ বিশ্বে এবার ধেয়ে আসছে সৌর ঝড়। এই ধরনের সৌর ঝড়কে বিজ্ঞানের ভাষায় নাম দেওয়া হয়েছে ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)। এই ভয়ঙ্কর ঝড় পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট কানেকশন বিঘ্নিত হতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই খবর সামনে এসেছে। আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই তথ্য সামনে এনেছেন।
মূল গবেষক, আরভিনের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঙ্গীতা আবদু জ্যোতি বলেছেন, যেটা সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, আমরা মহামারির জন্য যেমন প্রস্তুত ছিলাম না এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটার আশঙ্কা। কারণ, সূর্যের বায়ুমণ্ডলে কখন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় উঠবে তার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয় এখনও। তবে এটুকু বলা যায়, ওই ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে অন্তত ১৩ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে ইন্টারনেট ব্যবস্থা কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেই বিষয়ে গবেষকরা এখনই কিছু জানাতে পারছেন না। কারণ এর আগে ১৯২১ যখন ঝড় আছড়ে পড়েছিল, তখন পৃথিবীতে ইন্টারনেট পরিষেবা আসেনি। এর আগেও ১৮৫৯ আর ১৯২১ সালে এই ধরনের সৌরঝড় হয়েছিল পৃথিবীতে। ফের ১০০ বছর পর ফের ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের মুখোমুখি হতে চলেছে পৃথিবী। ১৯২১ সালে ভয়ঙ্কর সৌরঝড় আছড়ে পড়ায় পৃথিবীর যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। বিজ্ঞানের পরিভাষায় তার নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’। সেই সৌরঝড়ের আঘাতে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল। আর তার ফাঁক গলে ঢুকেছিল অত্যন্ত বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি। যে মেরুজ্যোতি (‘অরোরা’) শুধু পৃথিবীর দুই মেরুতেই দেখা যায় সাধারণত, সৌরঝড়ের আঘাতে বিষুবরেখার নিচে থাকা কলাম্বিয়াতেও দেখা গিয়েছিল। ১৮৫৯ এবং ১৯২১ সালের মতো তীব্রতায় অতটা না হলেও ১৯৮৯ সালের মার্চে যে সিএমই আছড়ে পড়ে পৃথিবীতে। সেই ঝড়ের আঘাতে কানাডার গোটা কুইবেক প্রদেশে টানা ন’ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে গিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, পৃথিবীসহ সৌরমণ্ডলের সব গ্রহের দিকেই ধেয়ে যায় এই সৌরঝড়। যে গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র প্রায় নেই বা খুব পাতলা, নেই বায়ুমণ্ডলও সেই গ্রহকে এই ঝাপটা বেশি সহ্য করতে হয়। তাই কোনও কালে প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব হলেও সেখানে তা টিকে থাকতে পারেনি মঙ্গল গ্রহে। তার চার পাশে চৌম্বক ক্ষেত্রে প্রায় নেই বলে। বায়ুমণ্ডলও খুব পাতলা বলে।