পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: মনের মধ্যে স্বপ্ন বুনেছিলেন ওঁরা। স্বপ্ন ছিল আকাশের চাঁদকে ছোঁয়ার। পরিশ্রম, মেধা, অধ্যাবসায় আর ইচ্ছা শক্তিকে পাথেয় করে আজ ভারতের নাম উজ্জ্বল করলেন এই কৃতীরা। বুধবার, ২৩ আগস্ট ঘরির কাঁটা যত এগোচ্ছে ততই অপেক্ষার পারদ উঠানামা করছিল মহাকাশ কেন্দ্র ইসরোর। সব বিজ্ঞানীদের চোখ স্ক্রিনের দিকে। অবশেষে নির্ধারিত সময় ৬.০৪ মিনিটে স্বপ্ন সফল হল ভারতের। ইতিহাস গড়ল দেশ। আর সেই সাফল্যের পিছনে যাদের নিরলস প্রচেষ্টা কাজ করল তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ গবেষকরা।
এনআরসি, এনপিআর নানান জাতীয় ইস্যুতে বরাবরই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। পেয়েছে ‘জঙ্গি তৈরির কারাখানার’ তকমা। কিন্তু আজ সেই দুই বিশ্ব-বিদ্যালয়ের কৃতীদের কৃতিত্বে গর্বিত ভারতবাসী। ইসরোর বিজ্ঞানীদের সাফল্যের কৃতিত্ব নিজের সরকারের কাঁধে নিয়ে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ‘চওড়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৫৬ ইঞ্চির ছাতি’। চন্দ্রযান ৩-এর সফল অবতরণের পিছনে রয়েছেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী মেধাবীছাত্র মুহাম্মদ কাশিফ, আরিব আহমদ ও অমিত কুমার ভরদ্বাজ। অবদান রয়েছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র ইশরাত জামাল, খুশবু মির্জা, প্রিয়াংশু ভার্শনের।
জামিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক সাফল্য। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে। সেই সঙ্গে ২০১৯ সালের ৩ প্রাক্তনী অমিত কুমার ভরদ্বাজ, মুহাম্মদ কাশিফ এবং আরিব আহমদকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সকলেই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্যাকাল্টি ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি নিয়ে ২০১৯ সালে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিটেক সম্পন্ন করেছেন। উক্ত বছরের তিন জনই ইসরো সেন্ট্রালাইসড বোর্ড পরীক্ষায় বসেন। এঁদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন মুহাম্মদ কাশিফ। তারপর ২০২১ সালে তিনজনই ইসরোর বিজ্ঞানী পদে নিযুক্ত হয়। এদিন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যাল্যের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক নাজমা আখতার এই সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানান।
অন্যদিকে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র প্রিয়াংশু ভার্শনে, ইশরাত জামাল, খুশবু মির্জাও এককভাবে এই প্রোজেক্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের অদম্য জেদ ও কঠোর পরিশ্রমের ফলেই আজ ‘চাঁদ চুমেছে’ ভারতের অশোক স্তম্ভ। ইতিহাস গড়েছে মহাকাশ বিজ্ঞানে। এই কৃতী ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়াংশু ভার্শনে ( বিটেক, এমটেক ইলেকট্রনিক্স)। ছোট থেকে দেশের জন্য কিছু করার অদম্য জেদ ছিল। সেই লক্ষ্য নিয়েই ইসরোতে যোগদান করেন। আজ তার ফল হাতেনাতে।
ইশরাত জামাল। ২০১৩ সালে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি টেক স্নাতক করেছিলেন। তিনি বর্তমানে ইসরোর ল্যাব ইলেকট্রনিক পাওয়ার কন্ডিশনার ডিজাইন এবং বিকাশের কাজে নিযুক্ত। পাশাপাশি ডিজিটাল সাবসিস্টেমগুলিকে চালনা করার কাজ তার অধীনে। এটি মিশনের সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল।
খুশবু মির্জা। ২০০৬ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রনিক্সে স্নাতক হন। চন্দ্রযান ২ ও চন্দ্রযান ৩ এককভাবে কাজ করে গেছেন তিনি। এই তিন ছাত্রের কৃতিত্বে গর্বিত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়।