পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার সবার রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তারকাদের মধ্যে ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয় লক্ষ্য করা যায়। বলিউডের বেশ কয়েকজন তারকা রয়েছেন যারা নিজের ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন। কেউ হয়েছেন ভালো লাগা থেকে। আবার কেউ গ্রহণ করেছেন নিজের প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি ঘটাতে। ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন এমনই কয়েক তারকাদের নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।
ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনি: ৭০’র দশকের সবচেয়ে সফল বলিউড তারকা যুগল ধর্মেন্দ্র-হেমা মালিনি। হেমার জন্ম একটি হিন্দু তামিল পরিবারে। প্রেমিক ধর্মেন্দ্রও হিন্দু ছিলেন। কিন্তু তাদের সম্পর্ক বিবাহে রূপ নিতে পারছিল না। কেননা ধর্মেন্দ্র ছিলেন বিবাহিত। তার প্রথম বিয়ে করা স্ত্রীর নাম ছিল প্রকাশ কউর।
হিন্দু শাস্ত্র মতে প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকতে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে না। তাই বিয়ের জন্য তাদের সামনে একটি পথই খোলা ছিল। আরও সেটি হল ধর্মান্তরিত হওয়া। করলেনও তাই। দুজনই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৯ সালের ২১ আগস্ট ইসলাম ধর্ম মতে বিয়ে করেন হেমা মালিনি ও ধর্মেন্দ্র। বিয়ের পর হেমার নাম বদলে রাখা হয় আয়েশা আরও ধর্মেন্দ্রর নাম রাখা হয় দেলওয়ার খান।
এ.আর. রহমান: তার সঙ্গীত সম্পর্কে সারা বিশ্বই এখন ওয়াকিফহাল। ভারতের বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালকদের একজন তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি হিন্দু ছিলেন। তার নাম ছিল এ. এস. দিলীপ কুমার। সুফি সঙ্গীতের প্রেরণা থেকেই ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি।
ছোট বেলায় ধর্মে খুব একটা বিশ্বাস করতেন না এ আর রেহমান। ১৯৮৪ সালে কিংবদন্তী এ শিল্পীর বোন কয়েক দফায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সে মুহূর্তগুলোতে তার বোন ধর্মের আদর্শ এবং মূল্যবোধ নিয়ে জ্বরের ঘোরের মধ্যে বিড়বিড় করতেন। তখন এই সংগীত শিল্পীর পরিচয় হয় কাদিরি ইসলামের সঙ্গে। তারপর ১৯৮৪ সালে পূর্বের ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম কবুল করেন তিনি। দিলীপ কুমার থেকে হয়ে ওঠে আল্লাহ রাখা রহমান।তবে তিনি এ আর রেহমান নামেই বেশি পরিচিত।
ভিভিয়ান ডিসেনা: ভারত-বাংলাদেশের মেয়েদের হার্টথ্রব ছিলেন তিনি। একসময় তাঁকে দেখার জন্য সন্ধ্যাবেলা কালার্স টিভি খুলে বসত গোটা দেশের সিরিয়ালপ্রেমীরা। ২০১২ সালে কালার্স টিভির মধুবালা: এক ইশক্ এক জুনুন সিরিয়ালে অসাধারণ অভিনয়ে গোটা দেশের মন জয় করেন ভিভিয়ান। খ্রিস্টান পরিবারে জন্মালেও ইসলামের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তিনি। ২০১৯ সালের রমজান মাসে তিনি ইসলাম কবুল করেছেন ভিভিয়ান। এমনকি দিনে পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়ে তিনি কতটা শান্তি বোধ করেন সাংবাদিকদের সামনে তাও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
মহেশ ভাট: বলিউডের বড় প্রডিউসার মহেশ ভাট এর নাম মাঝে মধ্যেই হেডলাইনে দেখা যায়। তবে তিনি মূলত বিতর্কিত ভাবেই শিরোনামে উঠে আসেন। মহেশ ভাটের মা ছিলেন একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মহিলা এবং বাবা ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আর তার বাবা মা বিয়ে বা নিকাহ সম্পন্ন করেননি। অর্থাৎ মহেশ ভাটের বাবা বিয়ে ছাড়াই এক সঙ্গে মেলামেশা করেছিল। আর এভাবেই মহেশ ভাটের জন্ম হয়। আর স্বাভাবিকভাবেই এই ব্যাপারটার প্রভাব মহেশ ভাটের জীবনে পড়ে। কলেজে পড়াকালীন সময়ে তিনি লোরিয়েন ব্রাইট নামে একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে পড়েন। তারপর তাকে বিয়ে করে ফেলেন। বিয়ে করার পর লোরিয়েন এর নাম পরিবর্তন করে রাখেন কিরণ ভাট। এরপর আবার একটি নতুন মেয়ে মহেশের জীবনে আসে। সোনি রাজদান নামের একটি মেয়ে মহেশের মনে ধরে যায়। আর তার প্রেমে পাগল হয়ে পড়েন মহেশ ভাট।
কিন্তু সেই মুহূর্তে মহেশ ভাট অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারছিলেন না। কারণ তার কিরণ ভাটের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক কাগজে-কলমে বিদ্যমান ছিল। তাই মহাশয়ের বন্ধুরা তাকে বলেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো। কারণ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে মহেশের পক্ষে দুটো স্ত্রী রাখা সম্ভব হত। আর এই পরামর্শ মহেশ ভাটের মনে ধরে যায়। উনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আশরাফ ভাট হয়ে যান।