ইসলামাবাদ: ‘শেষ আহ্বান’! প্রিয় নেতা ইমরান খানের ডাকে সাড়া দিয়ে ইসলামাবাদে পৌঁছেছেন লক্ষ লক্ষ কর্মী-সমর্থক। সঙ্গে রয়েছেন সদ্য জামিন প্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুসরা বিবি। দাবি ‘প্রিয় নেতার মুক্তি’। খানের মুক্তি ও বর্তমান সরকারের অপসারণের দাবিতে অগ্নিগর্ভ দেশটি। দেওয়া হয়েছে শ্যুট অ্যাট সাইটের নির্দেশ। বলা বাহুল্য, ভয়-ভীতি, গ্রেফতার , দমন-পীড়ন সব উপেক্ষা করে রাজধানী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন মানুষজন। পথিমধ্যে বুলেট কিংবা কাঁদনে গ্যাসের শেল ছুড়েও দমাতে পারেনি তাঁদের পদযাত্রা। দাবি পূরণে ডি-চকে পৌঁছেছেন তারা। এদিন পুলিশ পিটিআইয়ের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়লে পাল্টা জবাবে পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মারে। দুপক্ষের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ফলস্বরূপ অনেকেই আহত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে পিটিআইয়ের সঙ্গে সরকারের তরফে আলোচনায় বসেন ইন্টেরিয়র মিনিস্টার মহসিন নাকভি। ইমরানের দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন ব্যারিস্টার গোহর আলি খান এবং ব্যারিস্টার মহম্মদ আলি সইফ। তবে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি। আলোচনার নির্যাস শূন্য। পরে নাকভি জানান, গত বছর অগস্ট থেকে জেলবন্দি ইমরানের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে পিটিআই অনড়। পাশাপাশি, পার্লামেন্টের সামনে না বসে অন্য একটি জায়গায় ধর্নায় বসার সরকারি প্রস্তাবও পিটিআই প্রত্যাখ্যান করে বলে খবর।
নো মুড টু ডিসকাস: বুশরা বিবি: বিক্ষোভ–মিছিলে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ‘আপোষ নয়, সমাধান চাই’। ইমরানের মুক্তির চাই। ইমরান আমাদের সঙ্গে না থাকা পর্যন্ত আমরা এই বিক্ষোভ জারি রাখব। আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত সেখানে থাকব এবং আপনাদের সবাইকে আমাকে সমর্থন করতে হবে, এটা শুধু আমার স্বামীর লড়াই নয়, দেশ ও তার নেতার লড়াই। । বুশরা বিবি বলেন, ইমরান খান জনগণের কাছে আবেদন করেছেন, যারা এখনো বের হননি, তারা যেন নিজেদের ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য বেরিয়ে আসেন।
শাহবাজ শরীফ: এদিন পুরো ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন শাহবাজ শরীফ। শুধু তাই নয় বিদেশী অতিথির দেশে থাকাকালীন এহেন ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া ইসলামাবাদে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবিধানের ২৪৫ ধারা সক্রিয় করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। বিক্ষোভকারী ও বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনে বিক্ষোভকারীদের দেখামাত্র গুলি চালানোর মতো চরম পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনে যেকোনো এলাকায় কারফিউ জারি করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
কার্গো কনটেইনার বন্ধ রাস্তা-ঘাট: পিটিআই নেতা-কর্মীদের ঠেকাতে ইসলামাবাদের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত। কার্গো কনটেইনার দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ডি–চকের প্রবেশপথ।