পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: নবম উদয়পুর ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বাধা। গত শনিবার উদয়পুরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মেডিক্যাল কলেজ এনএলটি অডিটোরিয়ামে হামলা করে হিন্দুত্ববাদীরা। অভিযোগ, হামলাকারীরা আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত।
এবারের এই চলচ্চিত্র উৎসবটি সদ্য প্রয়াত মানবাধিকার কর্মী তথা অধ্যাপক জি এন সাঁইবাবা এবং গাজার গণহত্যায় নিহত শিশুদের উৎসর্গ করেন আয়োজকরা। সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই। পাশাপাশি উৎসবের উদ্বোধনের দিন ‘প্যালেস্টাইন প্যাকেজ’ নাম দিয়ে গণহত্যার উপর দু’টি স্বল্পদৈর্ঘ্যরে তথ্যচিত্র দেখানো হয়। প্রদর্শিত তথ্যচিত্র দু’টি হল— ‘কফিয়া: অ্যা রেভ্যুলিউশন থ্রু মিউজিক’ এবং ‘মালউল সেলিব্রেট ইটস ডিস্ট্রাকশন’।
হামলার সময় দুষ্কৃতীরা অধ্যাপক সাঁইবাবাকে সন্ত্রাসবাদী বলে উল্লেখ করে উৎসবের স্বেচ্ছাসেবক এবং দর্শকদের হুমকি দেয়। যাতে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপরেই কলেজ প্রশাসন চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধ করে দেয়। হামলার সময়ে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, হিন্দুত্ববাদীদের হামলার সময়ে পর্দায় চলছিল শবনম বীরমানি নির্মিত তথ্যচিত্র ‘হাদ-আনহাদ’, যাতে সন্ত কবীরের শ্লোকের মাধ্যমে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। এই তথ্যচিত্রে কবীর রামকে ব্রাহ্মণ্যবাদের দ্বারা প্রচারিত বিভাজনকারী ‘রাম’-এর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে।
ঘটনার পর সমস্যা সমাধানে আরএনটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে উৎসবের আয়োজক এবং আরএসএস-এর বৈঠক হয়। বৈঠকে গাজায় নিহত শিশুদের উৎসব উৎসর্গ করার জন্য আয়োজকদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি করে আরএসএস। হিন্দুত্ববাদীদের সেই দাবি মানতে অস্বীকার করে আয়োজকরা। এরপরই কলেজ কর্তৃপক্ষ উৎসব বাতিল করে দেন। যদিও এ বিষয়ে আরএনটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বিপিন মাথুর কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েন আয়োজকরা। সারাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এবং নির্মাতারা হতাশ। সমস্যা সমাধানে আয়োজকরা উদয়পুর জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করলে তিনি এ বিষয়ে নিজের অপারগতার কথা জানান বলে দাবি অভিযোগকারীদের।
পরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে উৎসবের তৃতীয় দিনের প্রদর্শনের জন্য অন্য ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে সারাদেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।