পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কিছুটা স্বস্তিতে কোঝিকোড়ের কে টি মুজিব। তিনি জমি দিয়েছিলেন নামায ঘরের জন্য। ২০০৪ সাল থেকে সেখানে ওয়াক্তিয়ার নামায পড়া হচ্ছিল। ২০১৪ সালে নামায ঘরের ছাদ নির্মাণের জন্য অনুমতিও পেয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় মানুষ আপত্তি জানায় এখানে মসজিদ তৈরি হলে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। বিষয়টি প্রথমে আদালতে আসে। আদালত এখানে সাময়িক নামাযের জন্য অনুমতি দেয়, কিন্তু স্থানীয় পঞ্চায়েত এনওসি দিতে চায়নি। পরে রেভিনিউ ডিভিশনাল অফিসার নির্দেশ দেন সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য প্রেয়ার-হলটি বন্ধ করে দেওয়া হোক। এরপর জেলা কালেক্টরও এই জমিতে ধর্মীয় অনুশীলন চলবে না বলে মুজিবের আর্জি খারিজ করে দেয়।
মামলাটি এরপর হাইকোর্টে আসে। বিচারপতি মুহাম্মদ নিয়াস সিপির বেঞ্চে শুনানি হয়। বিচারপতি বলেন, শুধু এই যুক্তিতে ধর্মীয় অনুশীলন করতে দেওয়া হবে না যে এর ফলে অন্য সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগবে, এই যুক্তি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। সংবিধানের ধারা ২৫ ও ২৬ গ্যারান্টি দিয়েছে ধর্মীয় অধিকারের। বিচারপতি বলেন, প্রশাসনের এই যুক্তিও টেকে না যে আশপাশে অন্য মসজিদ রয়েছে, তাই নামাযঘর এখানে বানানো চলবে না। সরকারের উচিত সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য যাতে ভঙ্গ না হয় সেসব দেখা।
এখানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় সামনে নেই। অন্য ধর্মের মাত্র কয়েকজন মানুষ শুধু আপত্তি জানিয়েছেন এই যুক্তি দেখিয়ে নামায ঘর বন্ধ করে দেওয়া যায় না।
বিচারপতি আরও বলেন, সরকারের উচিত বরং ধর্মীয় অধিকারকে সুরক্ষা দেওয়া। কোনও সরকারি নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে সংবিধানের সেক্যুলার ভাবধারাকে অবশ্য গুরুত্ব দেওয়া দরকার। ধর্মীয় অধিকার এবং সেক্যুলার মতাদর্শ এই দু’য়ের মধ্যে ভারসাম্য থাকা দরকার আর এটা দেখার দায়িত্ব কোনও সরকারের। আবেদনকারীর পক্ষে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, জেলা কালেক্টর নামায ঘরের এই আবেদন পুনর্বিবেচনা করুক এবং নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দিক। উল্লেখ্য, কেরলে রয়েছে বামপন্থীদের সরকার। সেখানে এভাবে ধর্মীয় অনুশীলনে বাধা পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল স্থানীয় মানুষ। কেরল হাইকোর্টের রায় বিজয়ন সরকারের মনোভাবের উপর বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন তাঁরা।