পুবের কলম প্রতিবেদক: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সাওগাত নিয়ে আবার এসেছে মাহে রমযান। সংযম, আত্মশুদ্ধি ও ক্ষমালাভের মাস এটি। মহান আল্লাহ্তায়ালার হুকুম অনুযায়ী এই মাসে ৩০ দিন রোযা পালন করতে হয়। এর মাধ্যমে রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য এবং তাক্ওয়া অর্জনের অপূর্ব সুযোগ এনে দেয়। রোযা ধনী-গরিব সবার মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করে। ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হল মাহে রমযানের রোযা। আরবি ‘রমাযান’ শধটি ‘রাময’ শধমূল হতে উদ্ভুত।
এর আভিধানিক অর্থ হল দহন, প্রজ্বলন, জ্বালানো তথা ভষ্ম করে ফেলা। রমযানের রোযা মানুষের কুপ্রবৃত্তি ও নফসের দাসত্ব জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। এই কারণে এ মাসের নাম হয়েছে রমযান।সিয়াম সাধনার মাধ্যমে ইমানদারগণ আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন পরিপূর্ণভাবে। মহান আল্লাহ্তায়ালা রমযান মাসের রোযা ফরয করার পাশাপাশি বিশ্বাসীদের জন্য তা সহজ করেও দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা সাধ্যের অতিরিক্ত কোনও কিছু চাপান না মানুষের ওপর। পবিত্র কুরআনে সূরা বাকারাহ্-য় আল্লাহ্পাক ইরশাদ করেন : ‘তোমরা পানাহার করতে পারো যতক্ষণ না রাতের কৃষ্ণরেখা মুছে ভোরের শুভ্ররেখা বের হয়ে হয়ে আসে।’
মুসলমানদের জীবনে রমযান মাস আল্লাহ্তায়ালার দয়া, ক্ষমা ও পাপমুক্তির এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে। এই মাসের মর্যাদা ও তাৎপর্য অপরিসীম। পবিত্র এই মাসে অবতীর্ণ হয়েছে কুরআনুল কারীম। মানবজীবনের পরিপূর্ণ জীবন-বিধান হল এই পবিত্র কুরআন। আর এই মাসের মধ্যেই রয়েছে মহিমান্বিত লাইলাতুল ক্বদর। রমযান মাসে বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় দোজখের দরজাসমূহ এবং শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয়। (তিরমিযি, নাসায়ী, ইবনে মাজা)।
এই মাসের নেক আমল অন্য মাসের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়। হাদিস শরীফে আছে রোযাদারের জন্য দুটো সময় খুবই আনন্দের। একটি হচ্ছে, ইফতারের সময় আর অন্যটি হচ্ছে, আখিরাতে যখন সে আল্লাহ্র দীদার লাভ করবে। রোযা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাখা হয়। লোকদেখানোর কোনও অবকাশ নেই এখানে। রোযাদারকে আল্লাহ্তায়ালা স্বয়ং নিজ হাতে পুরস্কার দিবেন এবং মাফ করে দেবেন তার অতীতের সব গুনাহ্।