পুবের কলম প্রতিবেদক: গিরিশচন্দ্র সেন প্রথম কুরআন শরীফের বাংলা অনুবাদ করেছিলেন। তাতে দোষের কিছু নেই। আর আমি ইসলামের সৌন্দর্য নিয়ে বই লিখলে যত দোষ! সমালোচকদের ঠিক এই ভাষায় জবাব দেন ডা. প্রকাশ মল্লিক। তাঁর কাছে ধর্মের মধ্যে ভেদাভেদ নেই, বরং সমন্বয়ে বিশ্বাসী তিনি। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল পবিত্র রমযান মাসকে তিনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন? আর রোযাকেও বা কি চোখে দেখেন? ডা. প্রকাশ মল্লিক উত্তরে জানালেন, আমি মনে করি রমযান মাস মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। রমযানে উপবাসের মূল উদ্দেশ্য হল, আত্ম নিয়ন্ত্রণ, আত্ম সংযম। এটাকে একটি আধ্যাত্মিক অথচ স্বাস্থ্য সম্মত ব্রত বলা যায়। এই মাসে খারাপ কাজ, খারাপ কিছু বলা বা শোনা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কারণ এই মাসটি মহান আল্লাহ নির্দেশিত পরম সত্যকে উপলব্ধি করার সময়। এই মাসে রোযা রাখলে বিশ্বাস ও প্রত্যয়কে মন ও হৃদয়ে একাত্ম হতে সাহায্য করে, এটা যাবতীয় ভোগ বিলাশ, কামনা-বাসনা, লালসা থেকে দূরে থাকার সময়। এইভাবে নিষ্টার সঙ্গে মহান আল্লাহ’র কৃপা প্রার্থনা মানুষকে পবিত্র করে তোলে। রোযা পালন আমার মনে হয়, সমাজকে সাহায্য, সহযোগিতা ও সহ মর্মিতার অন্যতম শর্ত। রোযা ধনি-দরিদ্রকে একাত্ম করে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে শেখায়। ত্যাগ, তিতিক্ষার অনুশীলনের মাধ্যমে সাম্য-মৈত্রী গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এ ছাড়া রোযা ভাঙার জন্য যে ইফতারের নিয়ম রয়েছে, তাতেও একে অপরকে সাহায্য করতে দেখতে পাই। সবাই একসঙ্গে ভাগ করে খাওয়ার মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বোধ জাগরিত হয়। এ ছাড়া রয়েছে জাকাত। যা ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে থাকে। আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষদের সাহায্য করে অপেক্ষাকৃত অর্থবানরা, এটা ইসলামেরই নির্দেশনা। এতে অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেকটা দূরিভূত হয়। এক কথায় বলা যায়, রমযান নিজেকে ফিরে পাওয়ার মাস। মহান আল্লাহ’র নৈকট্য লাভের মাস। এই একটি মাসের অভ্যাস সারা বছর টেনে নিয়ে যাওয়ার বিধানই রয়েছে ইসলামে। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য।