নিজস্ব প্রতিনিধি: রামপুরহাটের বাগতুই গ্রামে গণহত্যার ঘটনা নিয়ে কড়া পদক্ষেপের পথেই হাঁটল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে রয়েছেন এডিজি সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংহ। বাকি দুই সদস্য হলেন এডিজি পশ্চিমাঞ্চল সঞ্জয় সিংহ এবং ডিআইজি সিআইডি (অপারেশন) মিরাজ খালিদ। ঘটনায় জড়িত কাউকে যাতে ছাড়া না হয়, তার জন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী দলকে। শুধু যে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে তা নয়, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে রামপুরহাটের ওসি ত্রিদীপ প্রামাণিককে। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রামপুরহাটের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সায়ন আহমদেকেও।
সোমবার রাতে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন রামপুরহাটের বরশাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। আর জনপ্রিয় নেতার খুনের পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর অনুগামীরা। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে রাতেই বাগতুই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই আগুনে পুড়ে যায় বেশ কয়েকটি বাড়ি। পুড়ে মারা যান বেশ কয়েকজন। তবে কতজন মারা গিয়েছেন তা নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
বাগতুই গ্রামে গণহত্যার ঘটনা মঙ্গলবার সকালে জানাজানি হতেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়েই ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকার সঙ্গে কথা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। কাউকে ছাড়া হবে না। বীরভূমের জেলাশাসকের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই বীরভূমের জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। রাজ্য পুলিশের ডিজিকে সাংবাদিক সম্মেলন করে গোটা ঘটনা রাজ্যবাসীকে অবহিত করার নির্দেশ দেন।
রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ অভিসন্ধিমূলক সংবাদ প্রচার করে রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমতায় ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্যজনক মৃত্যুর পরেও একই কায়দায় প্রচার চালানো হয়েছিল। বিশেষ তদন্তকারী দলে এমন তিন দুঁদে পুলিশ আধিকারিককে রাখা হয়েছে যাঁদের কর্মদক্ষতা প্রশ্নাতীত। উপপ্রধান খুনের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ঘটনা ঘটানো হয়েছে নাকি ঘটনার পিছনে বৃহত্তর কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’