জেনেভা: বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতারকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে রাষ্ট্রসংঘে জানাল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুইদিনব্যাপী রাষ্ট্রসংঘের সংখ্যালঘু বিষয়ক ফোরামের ১৭তম অধিবেশনে বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের সরকার সজাগ রয়েছে এবং যেকোনও মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে চেষ্টা করছে। সংখ্যালঘুদের অধিকার ক্ষুন্ন করার যেকোনও প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করে যাবে সরকার।’
এ দিন রাষ্ট্রসংঘের ফোরামে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন। বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেফতার নিয়েও অভিযোগ করা হয়। এ বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, চিন্ময় দাসের গ্রেফতারকে কিছু বক্তা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, তাকে আসলে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন ও মীমাংসা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশের প্রতিনিধির কথায়, বাংলাদেশের জনগণ যখন ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবময় দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, তখন আমরা অতিরঞ্জিত, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট প্রতিবেদন এবং সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের ইচ্ছাকৃত ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তির ছড়াছড়ি লক্ষ্য করছি। দুঃখজনকভাবে আমরা এই ফোরামেও এটি দেখেছি। আরিফুল ইসলামের মতে, ‘বৈশ্বিক মিডিয়া এই ধরনের অনেক প্রোপাগান্ডা নাকচ করে দিয়েছে এবং অন্তর্র্বর্তী সরকার সরেজমিন পরিস্থিতি দেখার জন্য বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছে।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের মূল ভিত্তি বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বাংলাদেশির ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে নিজ নিজ ধর্ম পালন করার বা স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতাদের ধর্মের অধিকার বিষয়ে বারবার আশ্বস্ত করেছে।’ সংখ্যালঘুদের ওপর কোনও পরিককল্পিত আক্রমণ হয়নি উল্লেখ করে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর বিশ্ব দেখেছে কীভাবে বাংলাদেশের গোটা সমাজ বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘ ঐতিহ্য মেনে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছে।’